কিশোরীর ছবি তুলে ধৃত প্রৌঢ়

লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সচ্চিদানন্দ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিসি (এসএসডি) রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘ধৃতের মোবাইলে নাবালিকার বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি পাওয়া গিয়েছে। ফলে তাঁকে পকসো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

ধৃত: সচ্চিদানন্দ চৌধুরী

চলন্ত অটোয় কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। এ বারও গড়িয়া-টালিগঞ্জ রুটে।

Advertisement

এক কিশোরীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হন তার সহযাত্রী এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। নেতাজিনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সচ্চিদানন্দ চৌধুরী। তাঁর বাড়ি বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার রাজা এস সি মল্লিক রোডে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি মৌলালি ও পাটুলিতে চেম্বার করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার দুপুরে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে মায়ের সঙ্গে অটোয় চেপে ফিরছিল টালিগঞ্জের বাসিন্দা ওই কিশোরী।
সে দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পুলিশ সূত্রের খবর, অটোর পিছনের আসনের মাঝখানে বসেছিল কিশোরী। ওই নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, ‘‘মেয়ের ডান পাশে বসেছিলেন প্রৌঢ় সচ্চিদানন্দবাবু। গড়িয়া থেকে অটোতে ওঠার কিছু ক্ষণ পরেই মেয়ে আমাকে কানে কানে বলে, মা পাশের কাকু আমার ছবি তুলছে। এর পরে আমি ওই ব্যক্তিকে লক্ষ করতে থাকি। চলন্ত অটোয় প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে ওই ব্যক্তি ফোনটা উল্টো করে এক নাগাড়ে আমার মেয়ের ছবি তোলেন।’’ ওই মহিলার অভিযোগ, ‘‘আমি ও মেয়ে, দু’জনেই প্রতিবাদ করি। ওই ব্যক্তির কাছে মোবাইলটা চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সামনেই মেয়ের সব ছবি মুছে দেবেন।’’

Advertisement

এর পরেই বাঁশদ্রোণীর পুলিশ কিয়স্কের কাছে এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে দেখতে পেয়ে অটোটি দাঁড় করান ওই মহিলা। অটো থেকে নেমে এসে তিনি সার্জেন্টকে পুরো ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি জানাজানি হতেই প্রায় শ’দুয়েক স্থানীয় মানুষ জড়ো হয়ে যান ওই এলাকায়। পুলিশ জানায়, বাঁশদ্রোণী থানার কর্তব্যরত সার্জেন্ট ওই মহিলা, তাঁর নাবালিকা মেয়ে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে নেতাজিনগর থানায় যান। নাবালিকার বয়ান ও তাঁর মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সচ্চিদানন্দ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিসি (এসএসডি) রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘ধৃতের মোবাইলে নাবালিকার বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি পাওয়া গিয়েছে। ফলে তাঁকে পকসো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে সোমবার আদালতে তোলা হবে।’’

সম্প্রতি টালিগঞ্জ-গ়ড়িয়া অটো রুটে এক মহিলা যাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হন এক অটোচালক। ওই অটোচালকের গ্রেফতারের প্রতিবাদে পরিষেবা বন্ধ করে প্রতিবাদে সামিল হন বাকি অটোচালকেরা। রবিবার দুপুরের এই ঘটনায় কোনও অটোচালক অপরাধে জড়িত না থাকলেও তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই কিশোরী ও তার মা। ওই নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, ‘‘বাঁশদ্রোণীর পুলিশ কিয়স্কের কাছে আমাদের চিৎকারে অটোটি থামলেও ঘটনার সময়ে আমাদের পাশে থাকেননি ওই অটোচালক। উল্টে মাঝপথেই ভাড়া নিয়ে তড়িঘড়ি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি।’’ এ প্রসঙ্গে টালিগঞ্জ-গ়়ড়িয়া অটোরিকশা সংগঠনের সম্পাদক বিতান হালদার বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনার জন্য অটোচালকেরা এমনিই আতঙ্কে রয়েছেন। তাই ওই চালক এ দিনের গোলমালের সময়ে বেশি ক্ষণ দাঁড়াতে চাননি। কিন্তু পরে তিনি নেতাজিনগর থানায় গিয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন