বদলে গেল বিয়ের মেনু, দিতে হবে ক্ষতিপূরণ

বোনের বিয়ের সন্ধ্যায় অতিথিরা হাজির হয়ে যাওয়ার পরে আচমকাই ‘বদলে’ যাওয়া খাবারের মেনু দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল অমিত দত্তের।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছিল সর্ষে মাছ আর মাটন কষা। তাইল্যান্ডের খাবারের কাউন্টার। মিষ্টির মধ্যে রাবড়ি, রসমালাই।

Advertisement

অনুষ্ঠানের দিন দেখা গেল, রসমালাই থাকলেও রাবড়ি নেই। তাইল্যান্ডের খাবারের ছিটেফোঁটা নেই। সর্ষে মাছ, মাটন কষার জায়গায় চিংড়ির মালাইকারি আর মাটন বিরিয়ানি!

বোনের বিয়ের সন্ধ্যায় অতিথিরা হাজির হয়ে যাওয়ার পরে আচমকাই ‘বদলে’ যাওয়া খাবারের মেনু দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল অমিত দত্তের। এত দিন ধরে আলোচনা করা মেনু হঠাৎ বদলে যেতে দেখে মুখ টিপে হেসেছেন অনেক অতিথিও। লজ্জায়, অপমানে অমিত আর বলতে পারেননি, তিনি এক রকম মেনু দিয়েছিলেন, হোটেল অন্য খাবার দিয়েছে। সেই হোটেল ‘তাজ বেঙ্গল’-এর নামে পরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা ঠোকেন ওই ব্যক্তি।

Advertisement

অমিতের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, চলতি মাসে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, অমিতকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা দেবে তাজ। মামলা চালানোর জন্য দিতে হবে আরও ২৫ হাজার টাকা। অয়ন বলেন, ‘‘অগ্রিম হিসেবে যে চার লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম, সেটাও হোটেলকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’’ তাজ বেঙ্গলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা আদালতের নির্দেশ খতিয়ে দেখে মন্তব্য করবেন।

আদতে অসমের বাসিন্দা অমিত এখন থাকেন দক্ষিণ কলকাতায়। তাঁর কথায়, ‘‘বোনের বিয়ের এক বছর আগে যোগাযোগ করি হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।’’ বিয়ে হয়েছিল ২০১৪-র ৭ ডিসেম্বর। তারও বছরখানেক আগে হোটেলের তরফে প্রথম যে মেনু দেওয়া হয়, সেটি পছন্দ হয়নি অমিতের। তিনি যে মেনুর কথা বলেন, তার খরচ অনেক। তখন দ্বিতীয় মেনু কাটছাঁট করে চূড়ান্ত মেনু ঠিক হয়। আট মাস আগে অগ্রিম হিসেবে মোট খরচের অর্ধেক, চার লক্ষ টাকা হোটেলকে দেন অমিত। বাকি টাকা বিয়ের দিন দেওয়ার কথা ছিল।

অমিতের অভিযোগ, ‘‘বিয়ের সন্ধ্যায় শরবতের গ্লাস দেখে সন্দেহ হয়। এই রঙের শরবত তো বলিনি! ততক্ষণে খাবার এসে গিয়েছে। তা দেখে আকাশ থেকে পড়ি! আমার কাছে আসল মেনুটা ছিল। হোটেলের এক কর্মীকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, কতটা কী করা যাবে তিনি নিশ্চিত নন। তবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। কিন্তু, ওই ব্যক্তিকে আর খাবারের চৌহদ্দিতে দেখা যায়নি।’’

অমিত জানান, অতিথিদের সামনে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য তিনি তখনকার মতো চুপ করে যান। অনুষ্ঠান শেষে গভীর রাতে সকলকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পরের দিন হোটেলে গিয়ে পুরো ঘটনা বলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই মেনু বদল নিয়ে পরে বিস্তারিত ফোনালাপ হয় অমিতের। তাঁর আরও অভিযোগ, হোটেলের এক মহিলা কর্ত্রী তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। শেষে হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ই-মেল করে জানান, দোষ তাঁদেরই। তাই, ক্ষতিপূরণ হিসেবে অগ্রিম চার লক্ষ টাকার অর্ধেক ফেরত দেওয়া হবে। দিল্লির তাজ হোটেলে স্বামী-সহ ওই তরুণীকে সপ্তাহান্তে বিনামূল্যে থাকতে
দেওয়া হবে। যদিও সেই প্রস্তাবে রাজি হননি অমিত। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন