চুরির ঘটনার কথা বলছেন এণাক্ষীদেবী। নিজস্ব চিত্র
দোকানের খাতায় হিসেব মিলিয়ে রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ শুতে গিয়েছিলেন গৃহকর্তা। পৌনে ছ’টা নাগাদ ঘুম ভাঙতেই তাঁর চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। দেখলেন, শোয়ার ঘরের আলমারি হাট করে খোলা। ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে জামাকাপড় এবং টাকার ব্যাগ। ঘণ্টা তিনেক ওই ঘরে ঘুমোলেও কিছুই টের পাননি তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে সিঁথি থানা এলাকার কালীচরণ ঘোষ রোডে এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর বাড়িতে। প্রীতম নিয়োগী নামে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং লক্ষাধিক টাকার সোনা এবং রুপোর গয়না চুরি হয়েছে।
নিয়োগী পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ, দুষ্কৃতীরা ঘুমের ওষুধ স্প্রে করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। যে আলমারি থেকে চুরি হয়েছে, তার চাবি ঘরেই একটি সুইচ বোর্ডের উপরে থাকে। আলমারির লকারের চাবি থাকে খাটের পাশে একটি দেওয়াল আলমারিতে। সেখানে থাকে বাড়ির অন্যান্য চাবিও। কিন্তু এ দিন সকালে প্রীতমবাবু দেখেন, ওই দেওয়াল আলমারিটি বন্ধ। চাবিগুলিও একই ভাবে রাখা। চুরির পরে সেগুলি ফের সেখানে রাখা হয়েছে না কি চোরেরা ডুপ্লিকেট চাবি ব্যবহার করেছিল, তা খোঁজ করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:প্রতিবাদ করে প্রহৃত
প্রীতমবাবুর স্ত্রী এণাক্ষীদেবী জানান, দোতলায় যে ঘর থেকে চুরি হয়েছে, তার পাশেই রয়েছে বারান্দা। তাঁদের সন্দেহ, সেখান দিয়েই ঢুকেছিল চোর। কারণ বাড়ির অন্য সব দরজা বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল দোতলার অন্য দু’টি ঘরও। এণাক্ষীদেবী জানিয়েছেন, সকালে তিনি বারান্দায় একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। বাড়ির পিছন দিকে কয়েকটি ভাঙা টবও তাঁরা দেখেছেন। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল কিছু জামাকাপড়। এণাক্ষীদেবীর কথায়, ‘‘হয়তো সামনের বারান্দা দিয়ে চোর ঢুকে পিছন দিক দিয়ে পালিয়েছে। তবে ওরা নিশ্চয় কোনও ওষুধ স্প্রে করেছিল। না হলে ঘরে লোক ঢুকে আলমারি খুলে চুরি করে পালাল আর কিছুই টের পাব না?’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাড়ির সব খুঁটিনাটি জেনেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা। তবে, পরিচিত কেউ এই ঘটনায় জড়িত বলে মনে করছে না নিয়োগী পরিবার। প্রীতমবাবুর দিদি বৈশাখী বলেন, ‘‘এ পাড়ায় দীর্ঘ দিন আছি। কখনও এমন ঘটেনি। পরিচারিকা থেকে শুরু করে দোকানের কর্মচারী— বাইরের লোক তো অনেকেই আসেন। কিন্তু এমন কাজ কে করতে পারেন, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’