Death

Death: আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু

সম্প্রতি ফেসবুকে শুভ্রাংশুর সঙ্গে বাঘা যতীনের আবীর দাস নামে এক যুবকের আলাপ হয়। ইউটিউবের ব্যবসা করবেন বলে তাঁরা ঠিক করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২২ ০৬:৫৪
Share:

বাঘা যতীনের আবাসনের এই অংশ থেকেই নীচে পড়েছিলেন শুভ্রাংশু। নিজস্ব চিত্র।

চারতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। সোমবার সন্ধ্যায় বাঘা যতীনের একটি আবাসনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায় (১৮)। বাড়ি নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়িয়ার ফর্তাবাদে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

তদন্তে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ফেসবুকে শুভ্রাংশুর সঙ্গে বাঘা যতীনের আবীর দাস নামে এক যুবকের আলাপ হয়। ইউটিউবের ব্যবসা করবেন বলে তাঁরা ঠিক করেন। তদন্তকারীরা জানান, শুভ্রাংশু শনিবার বাবা-মায়ের সঙ্গে অশান্তি করে বেরিয়ে যান। সে রাতে সোনারপুরে এক বন্ধুর বাড়িতে থাকেন। রবিবার বাঘা যতীন মোড়ের একটি আবাসনের চারতলায় আবীরদের ফ্ল্যাটে ওঠেন। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় আবাসনের ছাদের ঘরে ছ’জন যুবক ইউটিউবে অভিনয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। আবীর মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সবাই ছাদের ঘরে বসে ইউটিউব নিয়ে কথা বলছিলাম। বাথরুম যাবে বলে শুভ্রাংশু ঘরে থেকে বেরোয়। কিছু ক্ষণ পরেই বিকট আওয়াজ পাই। ছাদ থেকে দেখি, শুভ্রাংশু রক্তাক্ত অবস্থায় নীচে পড়ে রয়েছে।’’ মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুভ্রাংশুকে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। ওই আবাসনের ছাদের ঘরটি পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তালা মেরে দিয়েছে। ছাদ ঘুরে দেখা গেল, চারপাশে কোমর সমান পাঁচিল। নীচে যে জায়গায় শুভ্রাংশু পড়েছিলেন, সেখানে রক্তের ছোপ তখনও ছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান শুভ্রাংশু চলতি বছরেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। গড়িয়ার বোড়ালে বাবা স্নেহাংশু মুখোপাধ্যায়ের ছোট ওষুধের দোকান রয়েছে। বোড়াল হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন শুভ্রাংশু। সেখানের প্রাক্তন শিক্ষক শ্যামলকুমার দত্ত শুভ্রাংশুর বাবার দীর্ঘদিনের বন্ধু। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘ছেলেকে ফার্মাসি নিয়ে স্নাতক (বি ফার্মা) পড়াতে চেয়েছিলেন স্নেহাংশু। কিন্তু শুভ্রাংশু জয়েন্টে ভাল ফল না-করায় সেটা হচ্ছিল না।’’ তদন্তকারীরা জানান, হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে চেয়েছিলেন শুভ্রাংশু। কিন্তু আর্থিক কারণে তা সম্ভব না জেনে বাড়িতে অশান্তি শুরু করেন। শনিবার এমনই কারণে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরোন ওই তরুণ।

Advertisement

ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শুভ্রাংশুর বাবা যাদবপুর থানায় গিয়ে লিখিত ভাবে জানান, তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন। পরিবারের মতে, এক দিকে বাবার ইচ্ছে মতো পড়াশোনা করতে না-পারা, অন্য দিকে নিজের ইচ্ছেয় হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে না-পারায় শুভ্রাংশুর অবসাদ বাড়ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, এর জেরে তিনি আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ফোনে আবীর বলেন, ‘‘ফেসবুকের মাধ্যমে দিন দুয়েক আগে শুভ্রাংশুর সঙ্গে আলাপ। ওর মৃত্যু এ ভাবে আমার বাড়িতে হবে, সেটা কিছুতেই ভাবতে পারছি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement