জাল নথি দেখিয়ে সাত কোটি ঋণ, ধৃত অভিযুক্ত

প্রাথমিক তদন্তে ও অয়নজিৎকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের ওই কর্তার সমঝোতা হয়। সেই মতো তাঁরা সাত কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

জাল নথি পেশ করে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে সাত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ না করার অভিযোগে এক যুবককে

Advertisement

গ্রেফতার করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম অয়নজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ভুয়ো সংস্থার নাম করে অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ না করার ঘটনায় কয়েক মাস আগে সিঁথি থানার পুলিশও ওই যুবককে গ্রেফতার করেছিল। এ বার অবশ্য ভুয়ো সংস্থা নয়। অস্তিত্ব থাকা বিভিন্ন সংস্থার জাল নথি পেশ করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে অয়নজিতের বিরুদ্ধে।

পুলিশ জানায়, অয়নজিৎ বছর দশেক বিদেশের কয়েকটি সংস্থায় কাজ করার পরে ২০১০ সালে

Advertisement

দেশে ফেরেন এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার সরবরাহের ব্যবসা খোলেন। ২০১৬ সাল থেকে ব্যবসার হাল খারাপ হতে শুরু করে। ওই সময়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় মানস ঘোষ নামে এক ব্যক্তির। তিনিও ব্যবসায়ী।

মানসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের এক উচ্চপদস্থ কর্তার। অয়নজিৎ ও মানস যৌথ উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করতে ২০১৬ সালে রাজ্য গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বেতড় শাখায় সাত কোটি টাকা ঋণ চয়ে আবেদন জানান।

প্রাথমিক তদন্তে ও অয়নজিৎকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের ওই কর্তার সমঝোতা হয়। সেই মতো তাঁরা সাত কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন জানান। টাকার অঙ্ক অনেক বেশি দেখে ওই শাখার আধিকারিকেরা সমস্ত নথি পাঠিয়ে দেন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের টিকিয়াপাড়ার সদর দফতরে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই উচ্চপদস্থ কর্তা তখন সদর দফতরেই কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ, তিনি কোনও নথি যাচাই না করেই ঋণ মঞ্জুর করে দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঋণ শোধ হচ্ছে না দেখে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানায় অয়নজিৎদের সংস্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তাঁরা জানান, ঋণ পেতে ওই সংস্থা যে দশটি সংস্থাকে ‘গ্যারান্টার’ হিসেবে দেখিয়েছে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত নথিই জাল। পুলিশ জানায়, সেপ্টেম্বর মাসে ভবানীপুরের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানকেও ‘গ্যারান্টার’ করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ পেয়েই গ্রেফতার করা হয় অয়নজিৎকে।

শনিবার তাঁকে ফের পুলিশি হেফাজত থেকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, বিচারক ধৃতকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী বুধবার তদন্তকারী অফিসারকে মামলার কেস ডায়েরি নিয়ে আদালতে হাজির হতে বলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন