জলকেলি: রবীন্দ্র সরোবরে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাঁসের দল। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
হাঁস চুরি বন্ধ করতে রবীন্দ্র সরোবরে আরও সিসি ক্যামেরা লাগাতে উদ্যোগী হল কেএমডিএ। কখন, কী ভাবে, কারা সরোবর থেকে হাঁস চুরি করছে তা দেখার পাশাপাশি সরোবরের সার্বিক নজরদারি জোরদার করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কেএমডিএ সূত্রের খবর।
রবীন্দ্র সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘সরোবরের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তার মধ্যে হাঁস চুরির বিষয়টিও রয়েছে। সরোবরের নিজস্ব নিরাপত্তা রয়েছে। তা ছা়ড়াও রবীন্দ্র সরোবরের জন্য নতুন থানা হয়েছে।’’ তিনি জানান, সরোবরের মধ্যে যে সমস্ত জায়গায় হাঁসেদের বাসা রয়েছে, সেখানেও যাতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকে, তারও ব্যবস্থা করা হবে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, সরোবর এলাকায় বর্তমানে ২০০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। নজরদারি জোরদার করার জন্য আরও ৫০টির মতো সিসি ক্যামেরা বসানো হতে পারে। কারণ, সরোবরের দ্বীপে সিসি ক্যামেরা নেই। বছর পাঁচেক আগে রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটূক্তি করা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। এর পরেই সরোবরে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, সৌন্দর্যায়নের জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ক্লাব ৫০টি হাঁস উপহার দিয়েছিল কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে। এখন রয়েছে ১৫টির মতো। প্রায় বছর দু’য়েক ধরেই তারা সরোবরে রয়েছে। সরোবরের মধ্যে যে দ্বীপ রয়েছে, সেখানে একটি ঘরে তাদের রাখা হয়। কেএমডিএ-র কর্মীরাই হাঁসেদের দেখাশোনা করেন। বছর দু’য়েক আগেই অভিযোগ উঠেছিল, নিরাপত্তারক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে হাঁস চুরি হচ্ছে। চুরির সময়ে রক্ষীরা কয়েক জনকে আটকও করেছিলেন বলে দাবি কেএমডিএ-র। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল।
কী করে হাঁস চুরি হয়? প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, খাবার দেওয়ার সময়ে হাঁসগুলি পাড়ের কাছে এলেই তাদের তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনার পরে সরোবরের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, রবীন্দ্র সরোবরের মতো বিশাল এলাকায় আপাতত ৫৪ জন রক্ষী রয়েছেন। তাঁদের কাজ দেখাশোনার জন্য রয়েছেন ছ’জন ‘সুপারভাইজার’। দিন ও রাত মিলিয়ে তিনটি ‘শিফট’ এ কাজ করা হয়। একটি শিফটে ১৮ জনের বেশি রক্ষী পাওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এর মধ্যে গেটে থাকেন ১৬ জন রক্ষী। এর ফলে বাকি দুই রক্ষী এবং কয়েক জন সুপারভাইজারের উপরেই পুরো এলাকা দেখভালের দায়িত্ব বর্তায়। কর্তৃপক্ষের দাবি, এলাকায় আরও বেশি রক্ষীর প্রয়োজন। তবে হাঁস চুরি আটকাতে তাদের খাবার দেওয়া বন্ধের ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।