দোতলা বাজার। একাধিক প্রবেশপথ। ফাঁকা জায়গাও রয়েছে বাজারের ভিতরে। কিন্তু কোনও ভাবে আগুন লাগলে কি বাজারটিকে বাঁচানো যাবে? কারণ, ওই বাজারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বলতে প্রায় কিছুই নেই। তার উপরে বাজারের মধ্যেই চলে আগুন জ্বেলে রান্নাবান্না। ফাঁকা অংশের অনেকটাই ভরাট হয়ে গিয়েছে দোকানে। সামনেই রাখা স্তূপীকৃত সামগ্রী। যার জেরে হাঁটার পরিসর কমে গিয়েছে ভিতরে। বিধাননগরের অধিকাংশ বাজারেরই এখন এমন হাল।
মহানগরে বড় কোনও অগ্নিকাণ্ডের পরে প্রতিবারই নড়েচড়ে বসে বিধাননগরের পুর প্রশাসন। নানা রকম পরিকল্পনা হয়। নিয়মকানুনও তৈরি হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, কার্যকর হয় না প্রায় কিছুই। এমনটাই অভিযোগ বিধাননগরবাসীর।
প্রতিবারের মতো এ বারেও অবশ্য পরিকল্পনায় কোনও ঘাটতি নেই। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের পরেও মেয়র পরিষদের বৈঠকে বাজারের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি দল তৈরি করা হয়েছে, যারা বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করে জমা দেবে। তার পরে দমকলের সঙ্গে পর্যালোচনার ভিত্তিতে সার্বিক রূপরেখা তৈরি হবে।
বিধাননগরের সিএ, এবি-এসি, বিডি, বিজে, সিকে, ইসি, আইএ এবং আইবি-র মতো বাজারগুলি থেকে শুরু করে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার বিভিন্ন বাজারেই কিন্তু অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বলে কার্যত কিছু নেই। কোনও বাজারেই দমকলের জন্য আলাদা করে জল সরবরাহেরও কোনও পরিকাঠামো নেই।
কেন্দ্রীয় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা শ্যামলকান্তি রায় জানান, বাজারগুলির হাল ফেরানোর বিষয়ে বিক্রেতাদের বিভিন্ন দাবি রয়েছে। তার মধ্যে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থাও রয়েছে। পুরসভাকে তা জানানোও হয়েছে। পুরকর্তাদের একাংশের কথায়, পুরসভার আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু সব দিক খতিয়ে দেখে সুসংহত পরিকল্পনা করতে চাইছে বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ।
বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে পুরসভায় আলোচনা হয়েছে। প্রতিটি বাজারের অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, কত দোকান রয়েছে, সেখানে কী কী ব্যবসা চলে, সে নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এই কাজের সঙ্গেই অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো তৈরির বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে দমকল দফতরের সাহায্য চাওয়া হবে। তার পরেই সুসংহত পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। তবু বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। পরিকল্পনা হলেও তার রূপায়ণ আদৌ হবে কি?