House collapse

House Collapse: বাড়ি ভেঙে আটক ৩৩ জন, পরে উদ্ধার 

টানা বৃষ্টিতে শহরে একের পর এক জরাজীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ছে। সম্প্রতি আহিরীটোলা স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণিতে বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে চার জনের মৃত্যুও হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২১ ০৫:০২
Share:

হুড়মুড়িয়ে: ভেঙে পড়েছে জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ। বৃহস্পতিবার, পাথুরিয়াঘাটায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ।

রাতের খাওয়ার তোড়জোড় চলছিল। ঠিক সেই সময়েই বিকট আওয়াজ। গোটা বাড়ি ধুলোয় ঢেকে যাওয়ায় চারপাশে কিছু দেখা না গেলেও বাসিন্দারা তত ক্ষণে বুঝে গিয়েছেন, তেতলা বাড়ির সিঁড়ি-সহ বারান্দার পুরোটাই ভেঙে পড়েছে। ভিতরে আটকে পড়া ৩৩ জন সদস্য তখন চিৎকার শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদেরই এক জন কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে ফোন করেন। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ১২ নম্বর পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের প্রায় তিনশো বছরের পুরনো বাড়িটিতে পৌঁছে পুলিশ, দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল শুরু করে উদ্ধারের কাজ। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেঙে পড়া সেই বাড়ির উদ্ধারপর্ব মিটতে অবশ্য রাত তিনটে গড়িয়ে যায়।

Advertisement

টানা বৃষ্টিতে শহরে একের পর এক জরাজীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ছে। সম্প্রতি আহিরীটোলা স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণিতে বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে চার জনের মৃত্যুও হয়েছিল। গত এক মাস ধরে শহর কলকাতায় প্রায় নিত্যদিন পুরনো বাড়ি ভাঙার ঘটনা ঘটেই চলেছে। পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের ভেঙে পড়া বিরাট তেতলা বাড়িটিকে আগেই ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করা হয়েছিল বলে কলকাতা পুরসভা জানিয়েছে। ওই বাড়িতে চার ভাড়াটে ও সেবায়েতদের পরিবার মিলিয়ে মোট ৩৩ জন থাকেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন প্রবীণ সদস্য।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িটির পিছনে একতলার বারান্দা থেকে দমকলকর্মীরা মই দিয়ে বাসিন্দাদের একে একে নামাতে শুরু করেন। গভীর রাতে তাঁদের উদ্ধার করে পাশের একটি ধর্মশালায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। যদিও বেশির ভাগ বাসিন্দাই ভাঙা বাড়ির কাছে একটি মন্দিরের সামনে বসে রাত কাটিয়েছেন। ওই বাড়ির বাসিন্দা তনুশ্রী ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘বাড়িতে সব রয়েছে। বাড়ি ছাড়া থাকব কী ভাবে? প্রশাসন দ্রুত ওই বাড়িতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিক।’’

Advertisement

প্রায় ৫১ কাঠা জায়গা জুড়ে থাকা ওই বাড়িটি তিন মহলা বলেই পরিচিত। অন্দর, মধ্য ও বাহিরমহল জুড়ে থাকা বাড়িটি দেবোত্তর সম্পত্তি। গুটিকয়েক সেবায়েতের পরিবার ওখানে বসবাস করে। অতীতেও বাড়িটির বিভিন্ন অংশ একাধিক বার ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির বিভিন্ন অংশ থেকে আগাছা বেরিয়েছে। খালি চোখে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বাকি অংশও যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।

পুরসভার তরফে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা সত্ত্বেও কেন বাড়ির সংস্কার করছেন না? বাড়ির এক সেবায়েত রঞ্জিত ভট্টাচার্যের উত্তর, ‘‘বাড়ি ভেঙে সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছি আগেই। এই বিপর্যয় কাটিয়ে আমরা সব পক্ষ বসে দ্রুত সমাধানের পথ বার করব।’’ আর কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘বিপজ্জনক ঘোষণা করা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। কারণ, বাড়িটি নিয়ে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে মামলা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন