জন্মদিনে মেয়র। — নিজস্ব চিত্র
শহর জুড়ে সিন্ডিকেট, জুলুমবাজি নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে নেতা-কাউন্সিলরদের নামে। সামনেই বিধানসভা ভোট। তার আগে দলীয় কাউন্সিলরদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে পরামর্শ দিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুর বাজেট ও ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। মূল সুর বাঁধা হয়েছিল কাউন্সিলরদের সৎ ভাবমূর্তি বজায় রাখা নিয়েই। সতীর্থ কাউন্সিলরদের তা জানাতে গিয়ে মেয়র বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, সৎ থাকুন। কেউ অসৎ হলে শাস্তি পেতে হবে। আমিও তার বাইরে নই।’’
পুর বাজেটে কাউন্সিলরদের কী করণীয়, তা নিয়েই বৈঠক— জনসমক্ষে তেমন বলা হলেও আসলে কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারম্যানদের নানা ভাবে সতর্কও করা হয়েছে। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার ১০ নম্বর বরোর কলোনিতে একটি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে পুরসভা। বরোর চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তই রুখে দাঁড়ান। কলোনির বাড়ি ভাঙতে হলে টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা মন্ত্রী, খোদ অরূপ বিশ্বাসের বাড়ি আগে ভাঙা হোক দাবি তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে কলোনির বাড়ি ভাঙার বিরোধী হলেও ওই ঘটনা চরম অস্বস্তিতে ফেলে মেয়র শোভনবাবুকে।
মেয়র বলেন, ‘‘কিছু কাউন্সিলর, বরো চেয়ারম্যান অমূলক ও দল বিরোধী কথা বলছেন। যাতে দল বিব্রত হয়েছে। তা বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে দল শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবে। কে কতটা সিনিয়র, এ ক্ষেত্রে তা দেখা হবে না। আমি কাউকে বাঁচাতেও পারব না।’’ যদিও কাউন্সিলরদের একাংশের মতে, কলোনির বাসিন্দাদের মন রাখতেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তপনবাবু, যা তিনি করেন দলের লাইন মেনেই।
২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সম্পর্কে এ দিন কাউন্সিলরদের জানানো হয়, ওই সভার জন্য প্রত্যেককে নিজের ওয়ার্ডে কমপক্ষে দু’টি করে তোরণ বানাতে হবে। লাগাতে হবে ফ্লেক্স ও পোস্টার। পুর বাজেটে কাউন্সিলরদের কী করণীয়, তা নিয়ে নির্দেশ দেন পুর-চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর মালা রায়। বাজেট চলাকালীন যাতে কেউ ঘুমিয়ে না পড়েন বা কোনও কাজে অন্যত্র না যান, তা নিয়েও সতর্ক করে দেন তিনি।
এ দিন ছিল মেয়রের জন্মদিন। বৈঠক শুরুর আগে কেক কাটেন তিনি। মেয়রকে কেক খাওয়ান রত্না শূর, জুঁই বিশ্বাস, সুমন সিংহ, ইলোরা সাহা, মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন মহিলা কাউন্সিলর।