পদের বদলে ঘর পাচ্ছেন বিরোধীরা

বামেদের বিরোধী দলের মর্যাদা না দিলেও শেষ পর্যন্ত বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস সকলের জন্য একটি করে ঘর বরাদ্দ করছেন ভাবী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সিদ্ধান্তে বদল হয়েছে আরও। টাউন হলের ভিতরে মেয়র, চেয়ারপার্সনের শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে বাইরে রাস্তায়। টাউন হলের সিঁড়ির সামনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৫ ০৩:৪৯
Share:

সৌজন্য। বিজেপি-র কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিতের সঙ্গে কলকাতার ভাবী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

বামেদের বিরোধী দলের মর্যাদা না দিলেও শেষ পর্যন্ত বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস সকলের জন্য একটি করে ঘর বরাদ্দ করছেন ভাবী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সিদ্ধান্তে বদল হয়েছে আরও। টাউন হলের ভিতরে মেয়র, চেয়ারপার্সনের শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে বাইরে রাস্তায়। টাউন হলের সিঁড়ির সামনে।

Advertisement

১৪৪ আসন বিশিষ্ট পুরসভায় দলের বিপুল জয়ের পরে ভাবী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘এ বার ভোটের ফলাফলে বিরোধী কোনও দলই একক ভাবে মোট ওয়ার্ডের ১০ শতাংশ পায়নি। বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে যা জরুরি ছিল। তা না মেলায় কোনও দলই বিরোধীর মর্যাদা পাবে না। এমনকী, তাদের জন্য ঘরও বরাদ্দ করা হবে না।

মেয়রের ওই বক্তব্যে জোর বিতর্ক বেধেছিল। যা শুনে প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ‘‘স্বৈরশাসকের নিদর্শন।’’ বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ হাসিম আব্দুল হালিমও বলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রে এটা হওয়া উচিত নয়।’’ এ দিন অবশ্য শোভনবাবু আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে জানিয়ে দেন, প্রতিটি বিরোধী দলকে ঘর দেওয়া হবে। এ দিন পুরসভায় নব নির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। শপথবাক্য পাঠ করান পুরসচিব বি পি গোপালিকা। কাউন্সিলর হিসেবে প্রথম শপথ নেন ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার পরেই ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের মালা রায়। এ বার পুরসভার চেয়ারপার্সন হচ্ছেন মালাদেবী। শপথের পরেই ভাবী মেয়র শোভনবাবু পরবর্তী চেয়ারপার্সন হিসেবে মালাদেবীর নাম ঘোষণা করে দেন। দু’দিন ব্যাপী শপথগ্রহণ পর্বে প্রথম দিন তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি এবং নির্দল-সহ ১২৫ জন শপথ নিয়েছেন। বামেদের ১৫ জনের কেউই এ দিন শপথ নেননি। নানা কারণে হাজির থাকতে পারেননি তৃণমূলের ৪ জন কাউন্সিলরও।

Advertisement

শপথের পরেই বিজেপি-র মীনাদেবী পুরোহিত ও কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায় সৌজন্য সাক্ষাতে মেয়রের ঘরে যান। শোভনবাবু জানান, তখনই ঘরের প্রসঙ্গটি ওঠে। তিনি তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, ঘর দেওয়া হবে। এর পরেই শোভনবাবু দেবাশিস কুমার এবং তারক সিংহকে সঙ্গে নিয়ে কাউন্সিলর ক্লাবের ভিতরে কোথায় কোন ঘর খালি রয়েছে, তা দেখতে বেরোন। পরে মেয়র জানান, বাম ও বিজেপিকে তাদের পুরনো ঘরই দেওয়া হবে। তবে কংগ্রেসের ঘর বদলাচ্ছে। সেই সঙ্গে জানানো হয়, পুরসভার বামেদের মুখ্য সচেতকের জন্য যে ঘর বরাদ্দ ছিল, তা এ বার তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের জন্য ব্যবহার করা হবে। এত দিন ঘরের অভাবে পুরসভার দুই মেয়র পারিষদের কক্ষ চারতলায় করতে হয়েছিল। তা এ বার দোতলায় নামিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ দিন শপথের পর থেকেই মেয়র পারিষদ কারা হচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা চলে নানা মহলে। আলোচনা হয় ডেপুটি মেয়রের পদ নিয়েও। এক পুর-আধিকারিক জানান, ওই পদে এক জন সংখ্যালঘু বিধায়ক-কাউন্সিলরকে বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে। দলীয় সূত্রে খবর, আজ, বুধবার পুর-কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলের মধ্যেই মেয়র পারিষদদের তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথমে ঠিক ছিল টাউন হলেই মেয়র পারিষদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। সেই কর্মসূচি বদলানো হয়েছে। ৮ মে টাউন হলে মেয়র ও চেয়ারপার্সন শপথ নেবেন। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রী, তৃণমূল সাংসদ, বিধায়ক-সহ বিশিষ্ট অতিথিরা। ওই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে পুরভবনে বিকেল তিনটেয় ডেপুটি মেয়র এবং মেয়র পারিষদদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন