উদ্ধার: হাওড়া ব্রিজের মাথা থেকে নামানো হচ্ছে যুবককে।—নিজস্ব চিত্র
এ যেন বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো!
হাওড়া ব্রিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতুর নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টাই মোতায়েন থাকে পুলিশ বাহিনী। প্রস্তুত থাকে রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডও। তার পরেও প্রায়ই দেখা যায়, কড়া নজরদারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেউ না কেউ সেতুর উপর উঠে পড়ছেন। শুক্রবার সকালেও এ ভাবেই ফের ব্রিজের উপরে উঠে পড়লেন এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। তাঁকে নামাতে গিয়ে আড়াই ঘন্টা ধরে হিমশিম খেল দমকল, পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। অফিসের ব্যস্ত সময়ে যানজটে আটকে নাকাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। আর এই ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল হাওড়া ব্রিজের মত একটি সেতুর নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও কতটা ফাঁক রয়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ১০টা নাগাদ পথচারীরাই প্রথম দেখতে পান কলকাতার দিকে সেতুর ৩৭ নম্বর স্তম্ভের কাছে এক যুবক চড়ে রয়েছেন। সেতুর কলকাতা প্রান্তে মোতায়েন পুলিশকে জানান তাঁরা। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আসেন কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, প্রথমে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের চার জন কর্মী সাদা পোশাকে ওই ৩৭ নম্বর স্তম্ভের আশপাশে উঠে পড়েন। তাঁরা ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সদস্যরাও উপরে গিয়ে পৌঁছোন। তাঁরা যুবকের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি উদ্ধারকারীদের ধাক্কা দেন। আঁচড়ে, খামচে বাধাও দিতে থাকেন। তার পর ওই যুবককে পাঁউরুটি ও আলুর দম খেতে দেওয়া হলে কিছুটা শান্ত হন তিনি। দমকলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর পরেই ওই যুবকের দু’টো হাত পিছমোড়া করে বেঁধে তার পর দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে নীচে নামানো হয়। উদ্ধারকাজ দেখতে জমে যায় কৌতূহলী জনতার ভিড়। সেতু জুড়ে শুরু হয় যানজট।
দমকলের ডিভিশনাল অফিসার কমলকুমার নন্দী বলেন, ‘‘ওই যুবক বাংলা বোঝেন না, সম্ভবত ত্রিপুরার বাসিন্দা তিনি। বিস্তারিত পরিচয় মেলেনি।’’ নামার পরে যারপরনাই বিরক্তি প্রকাশ করে পুলিশের কাছে ওই যুবকের দাবি, তিনি হাওয়া খেতে উপরে উঠতে চাইছিলেন।