...গন্ধ এসেছে

অঙ্গদানের বার্তা এ বার শহরের পুজো প্রাঙ্গণেও 

সেই প্রত্যাশায় ভর করে উৎসবের মরসুমকেই ব্যবহার করতে চাইছেন এ রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আন্দোলনের কর্মীরা।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪০
Share:

এ শহর মাঝেমধ্যেই সাক্ষী থাকছে অঙ্গদানের। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কি না, তা নিয়ে চিকিৎসক মহলেই প্রশ্ন রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অঙ্গদান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতাই পথ দেখাতে পারে। সেই প্রত্যাশায় ভর করে উৎসবের মরসুমকেই ব্যবহার করতে চাইছেন এ রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আন্দোলনের কর্মীরা।
পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ার আগেই অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে মঞ্চ প্রস্তুত করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। দক্ষিণ কলকাতার দু’-একটি ক্লাবের খুঁটি পুজোয় দেখা গিয়েছিল মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়ার বাসিন্দা রাধেশ্যাম রাহাংডালেকে। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর ছ’বছরের মেয়ে রিভ্যানির। রিভ্যানির বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়েছিল আট ব্যক্তির দেহে।
খুঁটি পুজোয় অঙ্গদান সচেতনতায় যে সুর বেঁধেছিলেন আন্দোলনকারীরা, তাকেই এ বার গানে পরিণত করতে চান তাঁরা। সেই লক্ষ্যে অঙ্গদানের অঙ্গীকারের বার্তার ব্যানার থাকবে শহরের আড়াইশো পুজোয়। বলা হবে, ‘করলে অঙ্গদান, অন্যরা পাবে প্রাণ/ তাদের চোখে, তাদের কাছে আপনি ভগবান’।
ওই বার্তার সঙ্গে একটি ভিডিয়ো ফু়টে়জে দেখানো হবে, মায়ের মৃত্যুর পরে একটি শিশুর কান্না। আত্মীয়-পরিজনের কোল ঘুরেও থামছে না তার কান্না। আচমকাই এক ব্যক্তির কোলে যেতেই শিশুটির গালভরা হাসি দেখা যায়। বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে গৌতম দাশগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘ওই ভিডিয়ো ফুটেজে শিশুটির হাসি-কান্নার মধ্যে দিয়েই অঙ্গদানের আবেগ বোঝানো হয়েছে।’’
উৎসবের সময়ে তো মানুষ পুজো নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন, তা হলে কেন সেই সময়টি বেছে নেওয়া? সে প্রসঙ্গে গৌতমবাবুর মত, ‘‘পুজো তো সর্বজনীন। বহু মানুষের
উপস্থিতি থাকে মণ্ডপে-মণ্ডপে। সেখানে অঙ্গদানের বার্তা দিতে পারলে তা সহজেই আমজনতার কাছে পৌঁছবে।’’ শুধুমাত্র বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত থাকবেন না অঙ্গদানের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। অঙ্গদানের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মও বিভিন্ন পুজো প্রাঙ্গণে পাওয়া যাবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন পুজোয় অঙ্গদান সচেতনতা সংক্রান্ত স্টলও থাকবে। সে ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলির কাছে স্টলে স্বেচ্ছাসেবক দেওয়ার আবেদন করেছিলেন গৌতমেরা। যাতে ফর্ম পূরণ করতে ইচ্ছুকদের বিষয়টি নিয়ে বোঝানো সম্ভব হয়। সব পুজো প্রাঙ্গণে অবশ্য স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া না গেলেও ব্যানার-ভিডিয়ো ফুটেজগুলি সর্বত্রই দেখা যাবে বলে দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের।

Advertisement

কালীঘাট এলাকার একটি পুজোর সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আমাদের খুঁটি পুজোয় অঙ্গদান নিয়ে প্রচার করা হয়েছিল। পুজোতেও সে ভাবেই অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করব।’’
আগামী ১৪ অক্টোবর আর্ন্তজাতিক টিস্যু এবং অঙ্গদান দিবস। ওই দিনই পড়েছে দুর্গাপুজোর পঞ্চমী। চক্ষুদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত, গণদর্পণের ব্রজ রায় জানাচ্ছেন, আগামী ১ অক্টোবর এই সচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে কালিম্পং থেকে। এই কর্মসূচি চলবে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন অঙ্গদানের স্বচ্ছতা নিয়েও। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি শহরে তিনটি হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন হল। যাঁদের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপিত হল, তাঁদের কিডনি কোথায় গেল? কিডনি পাওয়ার জন্য তো অনেক রোগী অপেক্ষা করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন