প্রতীকী ছবি।
এক তরুণীকে অপহরণ করে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দিয়েছিল অপহরণকারীরা। কিন্তু বাদ সাধছিল তরুণীর শিশুপুত্র। তাই শিশুটিকে বাবার কাছে ফেরত দেওয়ার শর্ত হিসেবে তরুণীর স্বামীর কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোনও করেছিল অপহরণকারীরা। সেই হুমকি-ফোনই কাল হল তাদের। পুলিশের জালে ধরা প়ড়ল দুই অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে এক জন অপহরণকারী এবং অন্য জন একটি যৌনপল্লির মালিক!
পুলিশ জানায়, ২১ জানুয়ারি কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন বছর সাতাশের ওই গৃহবধূ ও তাঁর ৯ বছরের শিশুপুত্র। বিকেলে ছেলেকে নিয়ে বেরোনোর পর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি ওই তরুণী। রাতেই নিখোঁজ ডায়েরি করেন তরুণীর স্বামী। কিন্তু তার পরেও তিনি স্ত্রীর খোঁজ পাননি।
এরই মধ্যে তরুণীর মোবাইল থেকে স্বামীর কাছে ফোন আসে। অপহরণকারীরা জানায়, ২০ হাজার টাকা দিলে তিনি ছেলেকে ফেরত পাবেন। না হলে বিপদ ঘটতে পারে। ভয় না পেয়ে তরুণীর স্বামী এবং বাপের বাড়ির লোকজন বিষয়টি থানায় জানান। এর পরেই যে দুষ্কৃতী ফোন করেছিল, তাকে শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে ডেকে পাঠায় পুলিশ। বলা হয়, মুক্তিপণ মিলবে। রবিবার বিকেলে সেই টাকা নিতে এসেই ধরা পড়ে যায় যতন চক্রবর্তী (৩০) ওরফে মিঠুন নামে ওই যুবক। তাকে জেরা করে রাতেই বর্ধমানের কালনার একটি যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয় তরুণী ও তাঁর শিশুপুত্রকে। গ্রেফতার করা হয় যৌনপল্লির মালিক সন্তোষ অগ্রবালকে (৪৫)। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা তরুণীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দিলেও সমস্যা হচ্ছিল তাঁর ছেলেকে নিয়ে। বাচ্চাটিকে নিয়ে সমস্যায় জেরবার হয়েই অপহরণকারীরা ঠিক করে, তরুণীর স্বামীকে ফোন করে শিশুটিকে ফেরত দেবে। কিন্তু ফেরত দেওয়ার ফোন করেই ভুল করে বসে তারা। তবে কেএলসি থানা এলাকা থেকে যে ব্যক্তি ওই তরুণীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, তার খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অপহৃতা তরুণীর সঙ্গে কয়েক মাস ধরে তাঁর স্বামীর গোলমাল চলছিল। তার সুযোগ নিয়েই অপহরণকারীদের এক জন তরুণীকে নানা প্রলোভন দেখায় এবং তাঁকে স্বামীর কাছ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তরুণীও ওই ব্যক্তির কথায় বিশ্বাস করেছিলেন।
তদন্তকারীদের কথায়, মিঠুন আগেও এক তরুণীকে একই ভাবে ফু সলিয়ে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছিল। পুলিশ এই চক্রের মূল পাণ্ডার খোঁজ করছে।