কলিং বেল বাজতেই দরজা খুলে দিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। কিন্তু বাইরে দাঁড়ানো তিন যুবককে দেখে তিনি চমকে উঠেছিলেন। কেননা অপরিচিত ওই যুবকদের এক জনের হাতে ছিল হাতুড়ি, বাকিদের হাতে ধারালো ছুরি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই গৃহকর্ত্রীর মাথায় হাতুড়ির আঘাত করল এক যুবক। বিপদ বুঝে চেঁচাতেই বাড়ির পরিচারিকার হাতে হাতুড়ির আঘাত করা হল। দু’জনের চিৎকারে অন্যান্য প্রতিবেশীরা জড়ো হতেই কোনও মতে দু’জন পালিয়ে বাঁচলেও শেষমেশ অবশ্য এক জন ধরা পড়ল।
মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে পার্ক স্ট্রিটের একটি অভিজাত আবাসনে। পুলিশ সূত্রের খবর, ৬১বি, পার্ক স্ট্রিটের ওই ছ’তলার আবাসনের তিন তলার ফ্ল্যাটে পরিচারিকা অনিতা তাঁতিকে নিয়ে থাকেন ৬৭ বছরের প্রৌঢ়া রাজ জৈন। তাঁর ছেলে শিবকুমার জৈন সপরিবারে ওই আবাসনেরই চারতলায় থাকেন। এ দিন রাজদেবী ও অনিতাদেবীর উপরেই হামাল করে ওই যুবকেরা। ঠিক কী কারণে ওই আক্রমণ তা অবশ্য পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে ওই তিন যুবক আবাসনের দোতলার গেস্ট হাউসে যাওয়ার নাম করেই ভিতরে ঢুকেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ ইমতিয়াজ। সে মধ্য কলকাতার বাসিন্দা। ওই যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হামলার পর রাজদেবী ও অনিতাদেবীর চিৎকারে লিফ্টম্যান ছুটে আসেন। তাঁকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে ওই দুষ্কৃতীরা। অবশ্য ছুরিটি ওই ব্যক্তির গা ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। সকলের চিৎকারে আবাসনের অন্যান্যরাও ছুটে আসেন। কোনও মতে দু’জন পালাতে পারলেও ইমতিয়াজ ধরা পড়ে যায়। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না রাজদেবীর ছেলে শিবকুমার। তিনি ও তাঁর স্ত্রী ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন।
এ দিনের ঘটনার পরে ওই আবাসনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিবকুমারবাবু বলেন, ‘‘আবাসনের দোতলায় একটা গেস্ট হাউস রয়েছে। সেখানে কে আসছে বা যাচ্ছে তা নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও নজর রাখেন না। যে কেউ যখন খুশি ওখানে ঢুকতে পারেন।’’ ঘটনার পরে পুলিশ সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে। রাজদেবীকে পার্কস্ট্রিটেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।