বাড়িতে ঢুকে ভোজালির কোপ প্রতিবাদী প্রৌঢ়কে

স্থানীয়েরা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে পাড়ার মুখে বসে মদ্যপান করছিল কয়েক জন। তাদের মধ্যে দুই যুবক, ইমতিয়াজ ওরফে রিঙ্কু ও তৌসিফের ওই পাড়ায় যাতায়াত ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

অকুস্থল: এই ঘরেই কোপানো হয় প্রৌঢ়কে। —নিজস্ব চিত্র।

কয়েক দিন ধরেই পাড়ার মুখে বসছিল মদ্যপানের আসর। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় পথচলতি মহিলাদেরও উত্ত্যক্ত করছিল কয়েক জন। পাড়ার মধ্যে মদের আসরের প্রতিবাদ করেছিলেন স্থানীয় এক প্রৌঢ়। তার জেরে রাতে বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে ভোজালি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল। সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কড়েয়া থানার বীরেশ গুহ স্ট্রিটে। ইকবাল সিংহ নামে ওই প্রৌঢ় হাসপাতালে ভর্তি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয়েরা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে পাড়ার মুখে বসে মদ্যপান করছিল কয়েক জন। তাদের মধ্যে দুই যুবক, ইমতিয়াজ ওরফে রিঙ্কু ও তৌসিফের ওই পাড়ায় যাতায়াত ছিল। কয়েক জন বহিরাগতও আসরে যোগ দিত বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ওখানে মদ্যপান করতে একাধিক বার রিঙ্কু ও তৌসিফকে বারণ করা হলেও তারা গ্রাহ্য করেনি। সোমবার রাতে ইকবাল ফের বারণ করলে রিঙ্কু ও তৌসিফের সঙ্গে তাঁর তুমুল বচসা হয়। তারা ওই প্রৌঢ়কে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো গোলমাল মেটে।

পুলিশ জানিয়েছে, ইকবাল চলে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে তাঁর বাড়িতে ঢুকে চড়াও হয় রিঙ্কু ও তৌসিফ। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সাজিদ ইমাম মঙ্গলবার বলেন, ‘‘রিঙ্কু ও তৌসিফ যখন সোমবার রাতে মদ্যপান করছিল, ইকবাল তাদের নিষেধ করেন। তখনই তাদের সঙ্গে ইকবালের ঝামেলা হয়। পরে ওরাই তাঁর বাড়িতে ঢুকে ভোজালির কোপ মারে।’’ এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, রিঙ্কু ও তৌসিফের বিরুদ্ধে আগেও পুলিশে অভিযোগ হয়েছিল। শেখ রাজা নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ওরা রিভলভার নিয়ে ঘোরে। হামলা চালানোর সময়েও রিভলভার ছিল।’’

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, বছর পঞ্চাশের ইকবাল ৪সি, বীরেশ গুহ স্ট্রিটে দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া থাকেন। তাঁর আর একটি বাড়ি রয়েছে তিলজলায়। সেখানে থাকেন তাঁর তিন মেয়ে। ইকবালের স্ত্রী বছরখানেক হল মারা গিয়েছেন। বীরেশ গুহ স্ট্রিটের বাড়িতে রোজ রাতে শুতে আসেন তিনি। পাশের ঘরের ভাড়াটে এন আলি বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ। তাই সোমবার রাতে কিছু টের পাইনি। পরে শুনি, ওঁকে মারধর করা হয়েছে।’’ বাড়ির মালিক ঋতু আলম বলেন, ‘‘ইকবাল বহু দিন ধরে এখানে আছেন। কোনও দিন ঝামেলা করতে দেখিনি। তবে সোমবার রাতে কিছু টের পাইনি।’’

রিঙ্কুর বাড়ি ইকবালের বাড়ির কাছেই। ঘটনার পর থেকে তার কোনও খোঁজ নেই। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেছেন, রিঙ্কু মদ খেয়ে স্ত্রীকেও মারধর করে। রিঙ্কুর স্ত্রী বলেন, ‘‘ওর ফোন বন্ধ। সোমবার রাতের ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’’ তবে কেন দোষীরা এখনও ধরা পড়ল না, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা। পুলিশ শুধু জানিয়েছে, দোষীদের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন