বারবারই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে জেলে বসেই নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার। এমনকী, তা দিয়ে সোশ্যাল নেটওয়াকিং সাইটে চ্যাট করার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। গত মাসেই ওই অভিযোগে তাকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে জলপাইগুড়ি জেলে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশের পরেও প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিল পার্ক স্ট্রিটে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুমান খান। মঙ্গলবার তার সেল থেকেই ফের মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। এক মাসের ব্যবধানে দু’বার একই আসামির সেল থেকে মোবাইল উদ্ধারের পরে জেলের ভিতরের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারা দফতরের অবশ্য দাবি, নজরদারির জন্যই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার গৌতম মণ্ডল হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত রুমানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তও শুরু করেছেন ওই থানার তদন্তকারীরা। পুলিশ জানায়, ওই জেলের ১৬ নম্বর সেলে রয়েছে রুমান খান ওরফে টুসি। সেই সেলেই আচমকা হানা দেন কারারক্ষীরা। রুমান খানের কাছ থেকে একটি অ্যানড্রয়েড ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সঙ্গে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ইন্টারনেট যুক্ত সিম কার্ডও। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই সিমটি বাজেয়াপ্ত হওয়া ফোনে ভরে জেলে বসেই সোশ্যাল নেটওয়াকিং করত রুমান। তার ফোনের কল লিস্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পার্ক স্ট্রিটে চলন্ত গাড়িতে এক মহিলাকে ধর্ষণ করে রুমান খান, সুমিত বাজাজ, নাসির খান, কাদের খান-সহ পাঁচ জন। পরে তাদের দোষী সাবস্ত্য করে আদালত।
পুলিশ জানায়, এর পর থেকেই প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি সে। মাস দুয়েক আগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সে জেলে বসেই বহাল তবিয়েতে সোশ্যাল নেটওয়াকিং সাইটে নিজের ছবি-সহ বিভিন্ন কিছু পোস্ট করছে। অভিযোগ এর পরেই তড়িঘড়ি তাকে জলপাইগুড়ি জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু এর পরেও প্রেসিডেন্সি জেলেই ছিল সে। কেন তাকে জলপাইগুড়িতে পাঠানো হল না? এক কারা কর্তা শুক্রবার জানান, রুমানকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশি পাহারা দরকার। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে সেই আইপিএল খেলার জন্য ফোর্স পেতে দেরি হচ্ছে। তবে খুব তাড়াতাড়িই তাকে ওই জেলে পাঠানো হবে। অন্য দিকে লালবাজার জানিয়েছে, জেল কর্তৃপক্ষ চাইলেই তার পাহারার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।