নীলের নেশায় মজেছে মশাও

মশারা নীল, লাল এবং কালো রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। শুধু তাই নয়, বডি স্প্রে, মদ এবং ঘামের গন্ধেও ছুটে আসে মশা। ৫০ মিটার দূর থেকেই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধ পেয়ে মানুষের পিছু নেয় ওরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

যে নীল-সাদা রঙে সেজেছে শহর, সেই নীল রঙে মজেছে মশাও।

Advertisement

মশারা নীল, লাল এবং কালো রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। শুধু তাই নয়, বডি স্প্রে, মদ এবং ঘামের গন্ধেও ছুটে আসে মশা। ৫০ মিটার দূর থেকেই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধ পেয়ে মানুষের পিছু নেয় ওরা।

এমনই তথ্য উঠে আসছে কলকাতা পুরসভার তথ্য ও জনসংযোগ দফতর থেকে প্রকাশিত মশা সংক্রান্ত বইয়ে। যদিও সব তথ্য ছাপিয়ে উঠে আসছে মশার নীল রঙের প্রীতি। কারণ কলকাতা পুরসভা আগেই ঘোষণা করেছে, বাড়িতে নীল-সাদা রং করলে ছাড় মিলবে সম্পত্তিকরে। শহরের সব সরকারি বাড়ি, রাস্তার ধার, বুলেভার্ড এমনকী পার্কের দেওয়ালও তাই নীল-সাদায় রাঙানো।

Advertisement

পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাসের লেখা ‘মশারে করো উৎসে বিনাশ’ বইয়ে নীল রঙের প্রতি মশার ভালোবাসার কথা জেনে পুর কর্তাদের অনেকেই এখন বিভ্রান্ত। তাঁদের প্রশ্ন, বাড়ির নীল রং কি তবে মশাকে বেশি আকর্ষণ করছে?

এই পরিস্থিতিতে নীল রঙের বাড়ি কতটা স্বাস্থ্য সম্মত সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আকাশি নীল রঙে কর ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সরকারি বাড়ি, পার্কের দেওয়াল, রাস্তার ধারে ওই নীল রঙের ব্যবহার হয়েছে। সেই রং মশাকে আদৌ আকর্ষণ করে না। বইয়ে উল্লেখ রয়েছে ‘কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধ ৫০ মিটার দূর থেকে অনুভব করতে পারে মশা। সেই গন্ধেই মানুষের পিছু নেয় মশককুল। তাদের পছন্দের রঙের তালিকায় রয়েছে গাঢ় নীল, লাল এবং কালো।’’

মশাবাহী রোগ থেকে বাঁচতে মশার উৎসস্থল ধ্বংস করার কাজকে গুরুত্ব দেন দেবাশিসবাবু। বইয়ে তা উল্লেখও করেছেন তিনি। মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে কী করতে হবে তা-ও লিখেছেন। সে সব লিখতে গিয়েই মশার পছন্দের রঙের কথাও উল্লেখ করেছেন। সেই রং নিয়েই এখন শুরু বিতর্ক। পুরসভার এক আমলা বলেন, ‘‘বাড়ি, সেতু, হাসপাতালে শুধু নীল রং তো নয়। সাদাও রয়েছে।’’

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, নীল সাদা রঙে কর ছাড়ের সরকারি ঘোষণায় নাগরিকদের থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। শতকরা এক ভাগেরও কম মানুষ তাঁদের বাড়ি নীল-সাদায় রাঙিয়ে কর ছাড়ের সুবিধা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ওই বইয়ে মশা সম্পর্কে অনেক তথ্য রয়েছে যা নাগরিকরা জানলে ডেঙ্গি- ম্যালেরিয়া দমনে পুরসভার হাত শক্ত হবে। যদিও বিতর্কিত নীল রঙে সেজে ওঠা বাড়ির উপরে বেশি পুর নজরদারি চলবে কি না সে বিষয়ে ওই কর্তা মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন