Dengue

বিক্রমের গাড়িতে মশার লার্ভা

টালিগঞ্জ থানায় বাজেয়াপ্ত থাকা বিক্রমের গাড়িতে মিলেছে মশার লার্ভা। ডেঙ্গির মরসুমে যা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে পুর কর্তাদের আশঙ্কা।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২৯
Share:

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়

বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের। তবে এ বার বিতর্কের তির সরাসরি তাঁর দিকে নয়। পুলিশের দিকে। কারণ, টালিগঞ্জ থানায় বাজেয়াপ্ত থাকা বিক্রমের গাড়িতে মিলেছে মশার লার্ভা। ডেঙ্গির মরসুমে যা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে পুর কর্তাদের আশঙ্কা।

Advertisement

২৯ এপ্রিল গভীর রাতে রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে বিক্রমের গাড়িতে দুর্ঘটনায় মারা যান মডেল সোনিকা সিংহ চৌহান। চালক ছিলেন স্বয়ং বিক্রম। ওই ঘটনার পরে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তখন থেকেই তা রাখা আছে টালিগঞ্জ থানার সামনে। দুর্ঘটনা এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে গাড়িটি ভেঙেচুরে গিয়েছিল। বেঁকে গিয়েছিল লোহার চাকাও। ওই অবস্থায় গাড়িটি টেনে এনে রাখা হয় থানায়। সম্প্রতি ওই এলাকায় মশার লার্ভা নিধনের কাজ করতে গিয়ে ওই গাড়ির ভাঙা চাকার উপরে জমে থাকা জলে মশার লার্ভা দেখে হতবাক হন পুরকর্মীরা। পুরকর্মীদের দাবি, তাঁদের গাড়িটি ছুঁতে দেওয়া হয়নি।

ভাঙা চাকার মধ্যে জমা জল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

কিন্তু কেন?

এলাকাটি কলকাতা পুরসভার আট নম্বর বরোর ৮৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। বরোর এক অফিসার জানান, শহরে প্রতি দিনই মশার লার্ভা নিধনের কাজ চালাচ্ছেন পুরকর্মীরা। সেই কাজ করতে গিয়েই পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্মীদের চোখে পড়ে গাড়িটির চাকায় জমে থাকা লার্ভা। কিন্তু তা ধ্বংস করতে বাধা পান তাঁরা। ওই থানার পুলিশের তরফে জানানো হয় গাড়িতে হাত দেওয়া যাবে না। কারণ গাড়িটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত। মামলার কারণে এই সব গাড়িতে হাত দেওয়া যায় না। তাই ঢাকা আছে। পুরসভার প্রতিনিধিদের সেটাই জানানো হয়েছে।

ঢাকা দেওয়া গাড়িতে মশার বংশ বিস্তার হল কী ভাবে?

পুরসভার ওই অফিসার জানান, চাকা বেঁকে রয়েছে। টায়ারও বাটির মতো হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেখানে জল জমে মশার বংশবৃদ্ধি হয়েছে। তবে ওই লার্ভা এডিস না অ্যানোফিলিস মশার তা জানতে পারেনি পুরসভার টিম। ওই দলের এক সদস্যের কথায়, ‘‘বলব কী করে? পরীক্ষা করার সুযোগই তো মেলেনি। পুলিশের হুঁশিয়ারি, ওখানে হাত দেওয়া যাবে না। তাই ওভাবেই রেখে আসতে হয়েছে।’’

আট নম্বর বরোতেই অভিযোগ জমা পড়েছে, ওই এলাকায় একাধিক বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, টালিগঞ্জ থানা সংলগ্ন পুলিশ কোয়ার্টারের বাসিন্দা শম্পা মোহান্ত (৪০) এবং কস্তুরী রায় (১৮) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁরা দু’জনেই দুই পুলিশ পরিবারের। স্বভাবতই আতঙ্ক রয়েছে খোদ পুলিশের মধ্যে। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায় জানান, বেশ কয়েকটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে টালিগঞ্জ থানার সামনে। কয়েকটি মিনিবাসও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় জল জমছে, মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘থানার আধিকারিক-সহ ডিসি (সাউথ)-কে বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁদের বলেছি অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যাতে পুরসভার টিম ওই সব গাড়িতে জন্মানো মশা ধ্বংস করতে পারে।’’

প্রশ্ন উঠেছে, শুধু তো টালিগঞ্জ থানা বা বিক্রমের গাড়ি নয়, শহরের আরও অনেক থানার সামনে বাজেয়াপ্ত গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেগুলির পরিণতি কী হয়?

(চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন