মুখোমুখি: কাউন্সিলরের সঙ্গে উত্তেজিত এলাকাবাসী। সোমবার, সল্টলেকের নগরোন্নয়ন দফতরের স্থানীয় অফিসের সামনে। নিজস্ব চিত্র
সল্টলেকের সরকারি আবাসনগুলিতে চলতি বছরে জ্বরের প্রকোপ দেখা গিয়েছে। জ্বরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বাসিন্দারা একাধিক বার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বার জ্বরে এক কিশোরীর মৃত্যুর পরে আবাসনগুলির দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থার অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা।
সরকারি আবাসনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে পরিষেবা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে। অথচ বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিষেবা মিলছে না। যার জেরে অনেক ক্ষেত্রে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
বিধাননগর পুর প্রশাসন এর আগে কয়েক বার অভিযোগ তুলেছিল যে সরকারি আবাসন ও অফিসগুলিতে দেখভালের অভাবে মশার আঁতুড় তৈরি হচ্ছে। এমনকী, স্বাস্থ্য ভবনে অভিযানও চালিয়েছিল বিধাননগর পুর প্রশাসন। তাই নিয়ে বিতর্কও দেখা দিয়েছিল।
সোমবার নগরোন্নয়ন দফতরের আওতায় থাকা বৈশাখী আবাসনের বাসিন্দারা ওই দফতরের স্থানীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাতে সামিল হন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিতা মণ্ডল। সম্প্রতি ওই আবাসনে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্মীর মেয়ে ঐশী মধুর মৃত্যু হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৈশাখী আবাসনে ‘ডি’ টাইপ যে ক’টি ভবন রয়েছে তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নগরোন্নয়ন দফতরের। কিন্তু নিয়মিত পরিকাঠামো সংস্কারের কাজ হচ্ছে না। আবাসনে ঝোপজঙ্গল হয়ে রয়েছে। নিকাশি নালাগুলি রুদ্ধ, চার দিকে আবর্জনার স্তূপ। এর জেরে জল জমছে। এমনকী, নিয়মিত মশার তেল স্প্রে করা বা ফগিং-এর কাজও হয় না। বাসিন্দাদের দাবি, নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক তাঁদের জানিয়েছেন, ওই আবাসনে মেরামতির কাজ চলছে। তাই আবর্জনা জমে রয়েছে। তা দ্রুত সরিয়ে নিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থাকে বলা হয়েছে।
কাউন্সিলর অনিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘মশা জন্মালে তো শুধু বৈশাখী আবাসনেই থাকবে না। আশেপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়বে। তাই কথা বলতে গিয়েছিলাম। বাসিন্দারাও ছিলেন। কাজ না হলে উচ্চ স্তরে অভিযোগ জানাব।’’
পুর প্রশাসনের একটি অংশের কথায়, সরকারি অফিস কিংবা আবাসনগুলিতে পুরসভার কিছু করার থাকে না। জনস্বার্থের কথা ভেবে পুরসভা সেখানে পরিষেবা দেয়। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘সরকারি আবাসন ও অফিসে পরিষেবার ক্ষেত্রে আমরা সাধ্যমত সহযোগিতা করব। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ যাঁরা করেন, তাঁদেরও দায়িত্ববান হওয়া প্রয়োজন।’’ চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘কার পরিষেবা দেওয়ার কথা, তা পরে ভাবা হবে। মানুষের সমস্যা হলে স্থানীয় প্রশাসন থেকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে।’’