Puja

দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণে রাজি নয় বেশির ভাগ পুজো

তবে কি এ বার বাইরের দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পথেই হাঁটবে শহরের পুজো কমিটিগুলি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৪
Share:

দূর-দর্শন: বাইরের লোকেদের জন্য এ বছর প্রবেশের দরজা বন্ধ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের মণ্ডপের। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

পুজোর বাকি আর এক সপ্তাহ। এর মধ্যেই বুধবার তাদের পুজোয় বাইরের দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার দুর্গাপুজো কমিটি। একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বেহালা দেবদারু ফটক সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটিও। দুই পুজোরই উদ্যোক্তাদের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

তবে কি এ বার বাইরের দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পথেই হাঁটবে শহরের পুজো কমিটিগুলি? যদিও বৃহস্পতিবার শহরের বেশির ভাগ পুজো কমিটিই জানিয়ে দিল, বাইরের দর্শনার্থীর প্রবেশ বন্ধের পথে হাঁটছে না তারা। কোনও কোনও পুজোর কর্তার দাবি, ‘‘শেষ মুহূর্তে প্রচার পেতে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কিছু পুজো।’’

বুধবারই আহিরীটোলা সর্বজনীনের পুজোর উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা ঘিরে ভিড়ের ছবিও ধরা পড়েছে। পুজোর উদ্যোক্তা দুলাল শীল বললেন, ‘‘মণ্ডপে ঢোকার ব্যাপার নেই। বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ প্রতিমা দর্শন করলে নিষেধ করব কী করে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন নিয়ে ভিড়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুরীর রথে তো আইন করা হয়েছিল, কী লাভ হল? কড়া আইন যখন নেই, এ নিয়ে কথা বলেও লাভ নেই।’’ কুমোরটুলি সর্বজনীনের পুজোকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের আবার দাবি, ‘‘বাইরের দর্শনার্থীর জন্য পুজো বন্ধ করা আসলে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা। কোনও পুজো কমিটিই এ কাজ করতে পারে না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: লন্ডন-কলকাতার উড়ানে নিয়ম শিথিলের ভাবনা

জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা দ্বৈপায়ন রায় যদিও বললেন, ‘‘আমরা দ্রুত বৈঠকে বসছি। সব দিক দেখে সিদ্ধান্ত নেব। মানুষের স্বার্থে যদি কিছু ত্যাগ করতে হয়, করা হবে।’’ বালিগঞ্জের সমাজসেবী সঙ্ঘের পুজোকর্তা অরিজিৎ মৈত্র বললেন, ‘‘এখনই দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধের ঘোষণা করছি না। তবে খুব ভিড় হলে বন্ধ রাখব।’’ ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজোর কর্তারা জানাচ্ছেন, তাঁরা এ বছর পরিচিত আড্ডাকে স্বাগত জানাচ্ছেন না। তবে এখনই কোনও ঘোষণা করছেন না।

একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো উদ্যোক্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “মানুষকে ঠাকুর দেখিয়েই আনন্দ পাই। ফলে অন্য কিছু করতে পারব না।’’ দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর কর্তা সুদীপ্ত কুমারের আবার দাবি, ‘‘কলকাতার পুলিশ কমিশনার আমাদের পুজো মণ্ডপ দেখে এ দিনই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ফলে পরিকল্পনায় কোনও বদল করার প্রশ্ন ওঠে না।’’

টালা বারোয়ারি পুজোর এ বার শতবর্ষ। পুজোর কর্তা অভিষেক ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘কিছু কমিটি পুজোর আগে প্রচারে ‘স্টান্টবাজি’ করছে। আসলে ওরা বুঝেছে, ট্রেন না চললে দর্শনার্থী হবে না। কলকাতার মানুষ পুজোর নামে ঝুলন দেখতে যান না।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো বন্ধের আসল কারণ খোঁজা হোক।’’ প্রসঙ্গত, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর প্রস্তুতি দেখতে সম্প্রতি সেখানে গিয়েছিলেন পুলিশের কয়েক জন কর্তা। মণ্ডপের তিন দিক খোলা না রাখা নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। এর পরেই সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের বুধবারের ঘোষণা। যদিও ওই পুজোর কর্তাদের দাবি, ভিড় এড়াতেই অভিনব সিদ্ধান্ত।

ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজোকর্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘অন্য কারও ব্যাপারে মন্তব্য করব না। আমরা বা ফোরামের সদস্য কোনও পুজোই দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন