দুই ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে সস্ত্রীক নিল ফনসেকা। পারিবারিক অ্যালবাম থেকে পাওয়া ছবি।
রাত থেকেই প্রবল অশান্তি চলছিল পাম অ্যাভিনিউয়ের বহুতলে তিন তলার ফ্যাটে। সকালে সেখানেই মিলল মা আর দুই ছেলের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। গলার নলি কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা গৃহকর্তাকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ৭৩/১সি পাম অ্যাভিনিউয়ের এই বহুতলের অদূরেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ি।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, গত চার বছর ধরে এই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকত নিল ফনসেকাদের এই সিংহলি পরিবার। বছর পঞ্চাশের নিল পেশায় ইন্টেরিয়র ডেকরেটর। তাঁর খুন হওয়া স্ত্রী জেসিকা (৪২), যমজ ছেলে ড্যারেন ও জসুয়া (১৬) ছাড়াও ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যটেই ছিলেন মেয়ে সামান্থা এবং শ্যালিকা শাবানা। সামান্থা এবং শাবানার দাবি, ফ্ল্যাটের অন্য একটি ঘরে থাকায় তাঁরা নাকি বিন্দুবিসর্গ জানতে পারেননি। দিন কয়েক ধরে এখানে এসে রয়েছেন নিলের মা শার্লি ফনসেকাও। তিনি মুম্বইতে থাকেন।
শার্লি পুলিশকে জনিয়েছেন, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ছেলের ঘরে নক করেও সাড়া পাননি। এর পর শাবানা এসে আবার দরজায় নক করতে থেকেন। এ সময় গলা কাটা অবস্থায় নিল ফনসেকাই দরজা খোলেন বলে জানা গেছে। তার পরই চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। ঘরে ঢুকে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তিন জনের লাশ।
হাসপাতালে শুয়ে কাতরাতে কাতরাতেই গৃতকর্তা নিল পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, অশান্তি চলতে চলতে তাঁর স্ত্রী জেসিকাই প্রথমে ছেলেদের খুন করে। তার পর তিনি খুন করেন স্ত্রীকে। এবং স্ত্রীর আঘাতেই আহত হন তিনি। এই দাবি সত্যি কি না তা নিয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। পুলিশের অনুমান এই খুন বা খুনোখুনি ঘটেছে ভোর চারটে থেকে সাড়ে চারটের মধ্যে।
গুরুতর জখম নিলকে এখনই জেরা করা সম্ভব নয়। একটু সুস্থ হলেই জেরা করা হবে তাঁকে।
মেয়ে সামান্থা (২০) আমেরিকায় পড়াশোনা করেন। ছুটিতে তিনি কলকাতায় এসেছেন। খুন হওয়া দুই যমজ ছেলে ড্যারেন ও জসুয়া ক্লাস নাইনের ছাত্র ছিল। ড্যারেন পড়ত সেন্ট জেভিয়ার্সে। অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চে পড়ত জেসুয়া।
নিলের শ্যালিকা শাবানা এই পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। তাঁকে ঘিরে কোনও অশান্তি ফনসেকা দম্পতির মধ্যে চলছিল কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।