Protest

পাঁচ-ছয় ঘণ্টার পথ পেরিয়ে শিশুকে নিয়েই ধর্না মঞ্চে মা

ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির কাছে গত এক মাস ধরে ২০১৪ সালে টেট পাশ করা ও প্রশিক্ষিত ‘নট ইনক্লুডেড’ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা মঞ্চ তৈরি করে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:১১
Share:

সহযোদ্ধা: দু’বছরের সন্তানকে কোলে নিয়েই প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে মা ফরিদা খাতুন। বৃহস্পতিবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

মায়ের কোলে দু’দণ্ডও শান্ত হয়ে বসে থাকতে পারে না দু’বছরের শিশুটি। তবু তাকেই সঙ্গে নিয়ে এসেছেন মা। কারণ, বাড়িতে শিশুটিকে দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই।

Advertisement

ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির কাছে গত এক মাস ধরে ২০১৪ সালে টেট পাশ করা ও প্রশিক্ষিত ‘নট ইনক্লুডেড’ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা মঞ্চ তৈরি করে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সেখানেই মা ফরিদা খাতুনের সঙ্গে বসে ছিল ছোট্ট শিশুটি। ফরিদা বললেন, ‘‘চাকরির দাবিতে এই আন্দোলন চলছে। সংসার চালানোর জন্য চাকরিটা খুব প্রয়োজন আমার। তাই রোজ না পারলেও যখনই সময় পাই, এখানে চলে আসি। সারা দিনের জন্য আসি। বাড়িতে ওকে দেখার মতো তেমন কেউ নেই। তাই ওকে সঙ্গে নিয়েই আসতে হয়।’’

ফরিদা জানান, তাঁর বাড়ি নদিয়ার চাপড়ার মহৎপুর গ্রামে। ফেরার সময়ে ধর্মতলা থেকে বাসে শিয়ালদহ যান তিনি। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে দু’ঘণ্টায় পৌঁছন কৃষ্ণনগরে। কৃষ্ণনগর থেকে আবার বাসে দু’ঘণ্টার পথ চাপড়া। চাপড়া থেকে টোটোয় ১৫ মিনিটের পথ মহৎপুর গ্রাম। কলকাতায় আসেনও একই পথে। ফরিদা বললেন, ‘‘সকাল ৬টায় বাড়ি থেকে বেরোলে সাড়ে ১০টা নাগাদ এই বিক্ষোভ মঞ্চে পৌঁছতে পারি। আবার সাড়ে চারটে নাগাদ এখান থেকে বেরোলে রাত ৯টা বেজে যায় বাড়ি পৌঁছতে।’’ ফরিদার বক্তব্য, যত দিন পর্যন্ত নিয়োগ না হচ্ছে, এ ভাবেই যাতায়াত করে সহ-চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থাকবেন তিনি।

Advertisement

চাকরিপ্রার্থীদের ওই মঞ্চে এসেছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁকেও নিজের সমস্যার কথা জানিয়েছেন ফরিদা। অপর এক চাকরিপ্রার্থী অচিন্ত্য সামন্ত জানান, ধর্মতলার ওই মঞ্চেই তাঁদের এক মাস কেটে গেল। এর আগেও তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিস-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এমনকি, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসের সামনেও রাতভর বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। অচিন্ত্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নবান্নের সভাঘরে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রাথমিকের ‘নট ইনক্লুডেড’ সমস্ত প্রার্থীকেই নিয়োগ করা হবে। কিন্তু এখনও সেই নিয়োগ হয়নি। ফরিদার মতো কয়েক জন মা আছেন, যাঁরা মাঝেমধ্যেই শিশুদের নিয়ে এই মঞ্চে চলে আসেন। এই মায়েদের যন্ত্রণা কবে শেষ হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন