শিয়রে ডেঙ্গি, পতঙ্গবিদ নেই দুই পুরসভায়

বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছে, পতঙ্গবিদ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ দমদম পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, নিয়োগের ক্ষেত্রে পতঙ্গবিদ হিসেবে কোনও অনুমোদিত পদ নেই। ফলে স্থায়ী নিয়োগ সম্ভব নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০৯:৫০
Share:

দমদমে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। ফাইল চিত্র।

পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে এক পতঙ্গবিদকে। তিনি সদলবলে দিনভর মশার উৎসস্থল খুঁজতে ঘুরছেন গোটা এলাকায়। ঝোপ-জঙ্গল-নালা নিয়মিত সাফ করার পাশাপাশি প্রতিটি এলাকায় চলছে সচেতনতার প্রচার।

Advertisement

ছবিটা নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির। অথচ আজ পর্যন্ত সল্টলেক থেকে শুরু করে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় কোনও পতঙ্গবিদ নিয়োগ করা হয়নি। প্রথাগত ভাবে মশা এবং জীবাণু চিনতে প্রশিক্ষণই সম্বল। যদিও দক্ষিণ দমদমে
পরিদর্শনে গিয়ে সেই প্রশিক্ষণের কী হাল, তার প্রমাণ পেয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা।

বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছে, পতঙ্গবিদ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ দমদম পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, নিয়োগের ক্ষেত্রে পতঙ্গবিদ হিসেবে কোনও অনুমোদিত পদ নেই। ফলে স্থায়ী নিয়োগ সম্ভব নয়।

Advertisement

কিন্তু নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কী ভাবে পতঙ্গবিদকে দিয়ে কাজ করাতে পারছে? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। সংস্থার চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, পরামর্শদাতা হিসেবে এক জন পতঙ্গবিদকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জন কর্মী মশার উৎসস্থল খোঁজা, জীবাণু চিহ্নিতকরণের কাজ করছেন। পাশাপাশি নিয়মিত জঞ্জাল অপসারণ থেকে শুরু করে জমা জল সরিয়ে ফেলা এবং সচেতনতা তৈরি করার কাজে সর্বাধিক জোর দেওয়া হয়েছে। নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট এরিয়া, হিডকো এবং নবদিগন্ত শিল্পনগরী এলাকায় সেই ভাবেই কাজ চলছে।

কিন্তু যে সব এলাকায় বছরের পর বছর মশা বাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে, অসংখ্য মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে— সেখানে অন্তত অস্থায়ী ভাবে পতঙ্গবিদ নিয়োগ করতে সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। এর উত্তরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, অস্থায়ী ভাবে পতঙ্গবিদকে কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

আরও পড়ুন: একটানা বৃষ্টিতে যানজট, ভোগান্তি

তবে পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, শুধু পতঙ্গবিদ নিয়োগ করেই সমস্যার সমাধান হওয়া মুশকিল। তার সঙ্গে ল্যাবরেটরিরও প্রয়োজন আছে। পুরসভাগুলির আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকে। পুরকর্তাদের বক্তব্য, জমা জল সরিয়ে, মশার উৎস খুঁজে বার করে লার্ভা ধ্বংস করে দিতে পারলে মশা বাহিত রোগের মোকাবিলা সম্ভব। তার পাশাপাশি প্রয়োজন মানুষকে সচেতন করা। সেই কাজ করা হচ্ছে বলে দুই পুরসভার দাবি।

তবে সল্টলেকের ১৪টি ওয়ার্ড কিংবা রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকার বেশ কিছু জায়গায় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিয়মিত মশা তাড়ানোর কাজ, ঝোপ-জঙ্গল সাফাই হচ্ছে না। পুরসভার তৎপরতা চোখে পড়ছে না। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, তেমন কিছু অভিযোগ পুরসভাতেও জমা পড়েছে। মশা তাড়ানোর কাজে নিযুক্ত কিছু কর্মীকে নিয়ে এক দফা বৈঠকও করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এক পুরকর্তার কথায়, প্রতিটি ওয়ার্ডকে ঘিরে মশা তাড়ানোর কাজের রূপরেখা ঠিক করা হয়েছে। সেই অনুসারে কাজ হচ্ছে। কোনও অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, পতঙ্গবিদ নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মশা মারার কাজে ইতিমধ্যে গাফিলতি ধরা পড়লেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন