সল্টলেকের সুকান্তনগরে বৃদ্ধা মালতী দাসকে হত্যা করার পিছনে প্রাথমিক উদ্দেশ্য লুঠপাট বলে মনে হলেও আরও রহস্য আছে বলে ধারণা পুলিশের। তাদের আরও সন্দেহ, পরিকল্পনামাফিকও ওই বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। সেই সূত্রে কয়েক জন ব্যক্তিকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে সুকান্তনগরের এফ ব্লকে একটি বহুতলের তিনতলার ফ্ল্যাট থেকে মালতীদেবীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
বুধবার ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জেনেছে, প্রথমে মালতীদেবীর গলা টিপে ধরা হয়েছিল। তিনি প্রতিবাদ করায় দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। তার পরে গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। পুলিশ জানায়, মালতীদেবীর মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মিলেছে দুষ্কৃতীর সঙ্গে ধস্তাধস্তির চিহ্নও। তবে কত জন দুষ্কৃতী ছিল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তারা মনে করছে, যতটা ধস্তাধস্তির চিহ্ন মিলেছে, তাতে সম্ভবত এক দুষ্কৃতীই বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল।
কিন্তু কেন এই খুন? এখনও পর্যন্ত পুলিশ মনে করছে, খুনের উদ্দেশ্য লুঠপাট। তবে চক্রান্তের তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। এমন ধারণার নেপথ্যে রয়েছে মালতীদেবীর সম্পত্তি। সুকান্তনগরের যে বাড়িতে তিনি আগে থাকতেন, সেটি প্রোমোটারকে দিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বাড়ি তৈরি হলে মালতীদেবী নিজের ফ্ল্যাট বিক্রি করে সুকান্তনগরের এফ ব্লকে নতুন একটি ফ্ল্যাটে চলে যান। তদন্তকারীরা জেনেছেন, পুরনো ফ্ল্যাট বিক্রি বাবদ বৃদ্ধা কয়েক লক্ষ টাকাও পেয়েছিলেন। সে কারণেই তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের পিছনে সম্পত্তি একটি মোটিভ হতে পারে।
যদিও মালতীদেবীর পরিবারের লোকজন এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। পুলিশ পরিবারের লোকদের থেকে জানতে পেরেছে, এক রঙের মিস্ত্রি মালতীদেবীর ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যেই যাতায়াত করতেন। এই নিয়ে বৃদ্ধার ছেলেমেয়েরা তাঁকে সতর্কও করেছিলেন। ইদের ছুটিতে এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতলগুলির মিস্ত্রিরা বাড়ি গেলেও ওই যুবক এলাকাতেই ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্র থেকে জেনেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলেছে না।
মালতীদেবীর পরিজনেরা পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে বৃদ্ধার ঘরে থাকা নগদ টাকা ও আরও কিছু সামগ্রীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।