dead body

Dead Body: পরিত্যক্ত পাম্প হাউসে যুবকের দেহ, মৃত্যুর কারণ ঘিরে রহস্য

খেলতে খেলতে বলটি ওই পাম্প হাউসে ঢুকে যায়। সেটি আনতে গিয়ে বাচ্চারা দেখে, ভিতরে পড়ে আছেন ওই যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

এই পাম্প হাউস থেকেই উদ্ধার হয় যুবকের দেহ। সোমবার, কসবায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

পরিত্যক্ত একটি পাম্প হাউস থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে কসবা থানা এলাকার কে এন সেন রোডে। পুলিশের দাবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। যদিও সিইএসসি কর্তৃপক্ষ পাল্টা দাবি করেছেন, ওই পাম্প হাউসে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল না এবং সার্ভিস পয়েন্টও সম্পূর্ণ বন্ধ করা ছিল। সে ক্ষেত্রে ওই যুবক কী ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কে এন সেন রোডে একটি মাঠে রয়েছে ওই পাম্প হাউসটি। রবিবার বিকেলে এলাকার একটি বস্তির বাসিন্দা কয়েকটি বাচ্চা মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। খেলতে খেলতে বলটি ওই পাম্প হাউসে ঢুকে যায়। সেটি আনতে গিয়ে বাচ্চারা দেখে, ভিতরে পড়ে আছেন ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, পাম্প হাউসটির ভিতরে মেন সুইচ-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতির মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে ছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর পরনে ছিল সাদা গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট, কোমরে বাঁধা ছিল গামছা। দেহ পোড়ার গন্ধে ভরে ছিল পাম্প হাউসের অভ্যন্তর। পুলিশের অনুমান, পাম্প হাউসে চুরি করতে ঢুকে কোনও ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। এলাকার বাসিন্দারাও তাঁকে চিনতে পারেননি।

পুলিশের দাবি, তারা ঘটনার কথা সিইএসসি-কে জানানোর পরে সংস্থার দক্ষিণ কলকাতার আঞ্চলিক ডিপো থেকে আধিকারিক এবং ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। এর পরেই পুলিশ জানতে পারে, পাম্প হাউসটি দীর্ঘকাল ব্যবহার না হলেও সেটির ভিতরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু ছিল। সম্ভবত ভিতরে ঢুকে ওই যুবক কিছু ছুঁয়েছিলেন। তার জেরেই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

Advertisement

যে বাচ্চারা রবিবার বিকেলে ওই মাঠে ক্রিকেট খেলছিল, তাদের মধ্যে দু’জন দেব দাস ও রাহুল নস্কর জানায়, পাম্প হাউসটির উপরের অংশ আমপানের সময়ে ভেঙে পড়েছিল। সেটির দরজাও ভাঙা। বলটি কোথায় ঢুকেছে, তা দেখতে গিয়ে ভাঙা দরজা দিয়ে উঁকি মেরে তারা দেখে, মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন ওই যুবক। এক বাসিন্দা অলোক ঘোষের কথায়, ‘‘ওই দৃশ্য দেখে আমরা শিউরে উঠি।’’

সোমবার কে এন সেন রোডে ওই মাঠে পৌঁছে দেখা গেল, পাম্প হাউসের ঢোকার গেট ভাঙা দরজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ভিতরে ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে লোহার যন্ত্রপাতি-সহ একাধিক জিনিসপত্র। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দশ-বারো বছর ধরে ওই পাম্প হাউসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ওই এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিজনলাল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমি যত দূর জানি, এই পাম্প হাউসটি কলকাতা পুরসভার নয়। তার ভিতরে যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু ছিল, এই দুর্ঘটনার পরেই আমরা সেটা জানতে পেরেছি।’’

যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, এলাকায় যখন গভীর নলকূপ ছিল, সেই সময়ে ব্যবহার হত পাম্প হাউসটি। সাম্প্রতিক সময়ে ওই মাঠে পুজো হলে পাম্প হাউস থেকে বিদ্যুতের লাইন টানা হত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সিইএসসি কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী যদি ওই পাম্প হাউসে বিদ্যুৎ সংযোগের সার্ভিস পয়েন্ট সম্পূর্ণ বন্ধই করা থাকবে, সে ক্ষেত্রে কী ভাবে পাড়ার পুজোয় বিদ্যুতের লাইন টানা হত? কী ভাবেই বা ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলেন? আপাতত এই প্রশ্নেরই উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন