হরিদেবপুরে এই সেই বার।—ফাইল চিত্র।
অবশেষে হরিদেবপুর-কাণ্ডে গ্রেফতার হল নান্টে। তাকে গুজরাত থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সোমবার সকালে লালবাজারে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ।
গত ৮ জুলাই রাতে হরিদেবপুরের একটি পানশালার বাইরে ব্যাপক বন্দুকবাজি হয়। গুলিতে মৃত্যু হয় এক যুবকের। পুলিশের দাবি, তারা নিশ্চিত ওই দিনের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিল স্থানীয় সমাজবিরোধী নান্টে ওরফে বাবলু ঘোষ। ওই রাতে যে ৩৫-৪০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, নান্টেও গুলি চালিয়েছিল। তবে, পুলিশ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। ঘটনার পর থেকেই মূল অভিযুক্ত নান্টেকে খুঁজছিল পুলিশ। এবং বারে বারেই সে পুলিশি তল্লাশি এড়িয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।
তবে, কোন পথে এ বার নান্টে পুলিশের জালে?
পল্লববাবুর দাবি, ওই রাতে ঘটনার পর নান্টে তার বাড়িতে যায়। পরিস্থিতির কথা আঁচ করতে পেরে সে জামাকাপড় বদলেই সোজা চলে যায় তার এক বান্ধবীর বাড়ি। জয়নগর এলাকার সেই বান্ধবী আবার পেশায় যৌনকর্মী। কিন্তু, পুলিশ এ কথা জানতে পারে। তারা ওই বান্ধবীর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। নান্টে যদিও তত ক্ষণে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বান্ধবীকে নিয়ে সে প্রথমে যায়, উত্তর ২৪ পরগনার একটি জায়গায়। লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারাও সেখানেও পৌঁছে যান। গুলি চালানোর ঘটনায় তিন অভিযুক্ত ভোদকা ওরফে সমীর বাগ, বাপ্পা ঘোষ এবং ধনঞ্জয় মিস্ত্রি ওরফে ধনাকে গ্রেফতার করলেও মূল পাণ্ডা নান্টে যদিও পালিয়ে যায়। এর পর তারা পৌঁছয় বর্ধমান। সেখানেও ফেউ হিসেবে পুলিশ। এর পর নান্টে আর কোনও রকমের ঝুঁকি নেয়নি। সঙ্গী বান্ধবীর মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে গিয়ে ওঠে তারা।
কিন্তু, পিছু ছাড়েনি পুলিশ। অন্য এক যৌনকর্মীর সূত্র ধরে তারা জানতে পারে, নান্টের ওই বান্ধবী আসলে নাম ভাড়িয়ে জয়নগরে থাকত। এমনকী, তার মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটের খরবও জেনে যায় পুলিশ। এর পর মুম্বই পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখা। কিন্তু, এ বারও পাখি উড়ে যায়। মুম্বই থেকে সোজা গুজরাত পালিয়ে যায় নান্টে। কিন্তু, সুরাত পৌঁছে প্রথম ভুলটি করে সে। টাকাপয়সা ফুরিয়ে আসায় সে কলকাতায় ফোন করে তার এক শাকরেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পল্লববাবুর দাবি, ওই শাকরেদ আগে থেকেই পুলিশের নজরদারিতে ছিল। কেন না সে পুলিশের সোর্স। কাজেই সেই সোর্সের কাঁধে ভর করেই নান্টের সুরাতে থাকার কথা পুলিশ জানতে পারে। এর পর রবিবার সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন রাতেই তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে।