বাড়ি ফিরল ডেঙ্গিতে মা হারানো শিশু

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল বেলুড়ের মা-হারা নবজাতক। পাঁচ দিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত মা প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়ালের ইচ্ছেমতো কুড়ি দিন বয়সের ওই ছেলের নাম রাখা হল দেবাংশ।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২২
Share:

দেবাংশ জয়সওয়াল

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল বেলুড়ের মা-হারা নবজাতক। পাঁচ দিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত মা প্রিয়াঙ্কা জয়সওয়ালের ইচ্ছেমতো কুড়ি দিন বয়সের ওই ছেলের নাম রাখা হল দেবাংশ।

Advertisement

বেলুড় গিরিশ ঘোষ রোডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা সন্তান জন্ম দেওয়ার দু’দিন পরেই জ্বরে আক্রান্ত হন। বেলুড়ের একটি বেসরকারি মাতৃসদনে ভর্তি থাকার সময়েই তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এনএস-১ পজিটিভ আসে। অবস্থার অবনতি হওয়ার ২ নভেম্বর প্রিয়াঙ্কা ও তাঁর সন্তানকে মিন্টো পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শিশুটির রক্ত পরীক্ষাতেও ডেঙ্গি ধরা পড়ে। ১১ নভেম্বর রাতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রিয়াঙ্কার মৃত্যু হয়। এর পর থেকে ওই হাসপাতালে একাই চিকিৎসাধীন ছিল দেবাংশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হলে বেলুড়ে নিয়ে আসেন পরিজনেরা। শোকের পরিবেশের মধ্যেই ‘নতুন অতিথি’ সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল জয়সওয়াল পরিবার। প্রিয়াঙ্কার কাকা কানাইলাল জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাচ্চাটাকে সুস্থ ভাবে বাড়ি নিয়ে আসতে পেরে ভাল লাগছে।’’ তিনি জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই বেলুড়ের ওই তরুণী মনস্থির করেছিলেন ছেলে হলে দেবাংশ আর মেয়ে হলে দেবাংশী নাম রাখবেন। তাঁর সেই ইচ্ছেমতোই সদ্য মা-হারা শিশুর নাম রেখেছেন পরিজনেরা। তাঁরা জানান, পরিবারের অন্য মহিলারাই দেখভাল করবেন ছোট্ট দেবাংশের।

Advertisement

তবে কোনও ভাবেই যাতে ওই শিশুকে মশা না কামড়ায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে বলেই অভিমত শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের। তিনি জানান, গর্ভাবস্থায় শিশুটির প্রথম ডেঙ্গি হয়ে গিয়েছে। তাই পরের বার ডেঙ্গি হলে সেটা মারাত্মক হতে পারে। হয়তো সে ক্ষেত্রে ফের হাসপাতালে ভর্তি করেই চিকিৎসা করতে হবে। শিশুটির রক্ত পরীক্ষায় আইজিএম পজিটিভ এবং আইজিজি নেগেটিভ মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘খুব সাবধানে শিশুটিকে রাখতে হবে। ডেঙ্গির মরসুমে খেয়াল করে ওকে মশারির ভিতরে রাখা দরকার। সর্দি-কাশির উপসর্গ ছাড়া টানা কয়েক দিন জ্বর থাকলে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে।’’ সাধারণত বেশির ভাগ বাচ্চার ডেঙ্গি হয় ৬-৭ বছর বয়সে। কিন্তু একটা বাচ্চার যদি এক বছরেই দ্বিতীয় বার ডেঙ্গি হয়ে যায়, সেটা খুবই চিন্তার। তাই দেবাংশের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা বিশেষ প্রয়োজন বলেই অভিমত ওই শিশু চিকিৎসকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন