ডেঙ্গি-যুদ্ধ

সপ্তাহে তিন দিন শহরে অভিযান চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী

শুধু আলাদা করে স্বাস্থ্য বিভাগ, নিকাশি বিভাগ বা বিল্ডিং বিভাগ নয়, পুরসভার প্রতিটি দফতরকে নিয়ে সমন্বয় কমিটি গড়ে ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগ মোকাবিলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক বৈঠকে বিধাননগর, দক্ষিণ দমদম, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভাকে সর্বশক্তি দিয়ে এ কাজে নামতে নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:১১
Share:

মশার আঁতুড়ঘর। সল্টলেকের ই ই ব্লকে। মঙ্গলবার। ছবি: শৌভিক দে

শুধু আলাদা করে স্বাস্থ্য বিভাগ, নিকাশি বিভাগ বা বিল্ডিং বিভাগ নয়, পুরসভার প্রতিটি দফতরকে নিয়ে সমন্বয় কমিটি গড়ে ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগ মোকাবিলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক বৈঠকে বিধাননগর, দক্ষিণ দমদম, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভাকে সর্বশক্তি দিয়ে এ কাজে নামতে নির্দেশ দেন তিনি। ওই পুরসভাগুলিকে এ বছর ইতিমধ্যেই ‘ডেঙ্গি প্রভাবিত’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য ভবন। বৈঠকে এর কারণ হিসেবে নজরদারির গাফিলতি নিয়ে পুর-আধিকারিকদের যথেষ্ট তিরস্কারও করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

এ দিন নবান্নের ওই বৈঠকে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে বর্তমানে কী কী করা হচ্ছে, তার একটি রিপোর্ট পেশ করেন তাঁরা। পুরসভা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার থেকে সপ্তাহে তিন দিন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রোগ সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে তারা। এখন সপ্তাহে এক দিন মাত্র ওই ভাবে খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু সপ্তাহে তিন দিন ওই কাজ করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী কোথা থেকে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ ফাঁপরে। এ দিনও কলকাতা শহরের একাধিক জায়গায় মশাবাহিত রোগ দমনে অভিযান চালান পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত জানান, সল্টলেক লাগোয়া ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েক জন জ্বরে ভুগছিলেন। রক্ত পরীক্ষায় ১০ জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।

তবে নজরদারির অভাবের ছবিটা স্পষ্ট বিধাননগরের বিভিন্ন সরকারি আবাসনের হালেই। যত্রতত্র জমে রয়েছে জল। বিভিন্ন সরকারি আবাসন থেকে জ্বরের খবর পেয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ বিধাননগর পুর-নিগমের কর্তাদের। বেশি চিন্তায় রেখেছে তিন নম্বর সেক্টরে ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুল সংলগ্ন সরকারি ও বেসরকারি আবাসনগুলি। ইতিমধ্যেই সল্টলেকে নতুন করে আরও চার জনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলতি সপ্তাহেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শপিং মল কর্তৃপক্ষদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন পুরকর্তারা।

Advertisement

অন্য দিকে স্কুলগুলির একাংশের যে এখনও হুঁশ ফেরেনি, তার প্রমাণও মিলেছে। এ দিন দুপুরে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সি জে ব্লকের একটি স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাইরে ও ভিতরে জঞ্জাল জমে রয়েছে। ঝোপঝাড় থেকে মুখ-খোলা পাতকুয়ো— অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্কুল চত্বরে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুর-নিগমের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুর-কমিশনারকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’ কেষ্টপুর খালপাড় সংলগ্ন আর একটি স্কুলের চার পাশে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলের ভিতরে তাঁরা নিয়মিত জল সরানোর কাজ করেন।

ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে এ দিন পথে নামে হাওড়া পুরসভা। গত দু’মাসে ২৪ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গির লক্ষণ মিলেছে। যদিও প্রাথমিক পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েনি। হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য জানান, মার্চ মাস থেকেই পুর-নিগমের ৬৬টি ওয়ার্ডে সমীক্ষার কাজ চলছে। আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবু সচেতনতার প্রচারের ক্ষেত্রে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তিনটি দলে ভাগ করে সেই কাজ হচ্ছে। পাশাপাশি ২০ জনের একটি র‌্যাপিড অ্যাকশন টিম গড়া হয়েছে, যাঁরা লার্ভা শনাক্ত করে তা নিয়ন্ত্রণের কাজ করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement