সাজছে নিউটাউনের উপাসনা ঘাট। ছবি:শৌভিক দে
পুজো দোরগোড়ায়। মণ্ডপ তৈরির কাজও শেষের পথে। বিসর্জনের ঘাটের প্রস্তুতিও চূড়ান্ত। গত বছরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন বিসর্জনের সময় বাবুঘাটের চাপ কমাতে স্থানীয় ঘাটের পরিকাঠামো ভাল করতে। সেই নির্দেশ মতোই উত্তর কলকাতায় দু’টি ঘাট গত বছর শেষ মুহূর্তে প্রস্তুত করা হয়েছিল। একটি ভিআইপি রোডের গোলাঘাটার কাছে দেবীঘাট ও অন্যটি নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ানে উপাসনা ঘাট। এই দু’টি ঘাট এ বার ভাসানের জন্য আরও সেজে উঠেছে।
হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, গত বছর ৪০টির মতো প্রতিমা বিসর্জন হয়েছিল নিউটাউনের উপাসনা ঘাটে। এ বার পরিকাঠামো আরও উন্নত করা হয়েছে। বিসর্জনের সময় অভিনব কিছু ব্যবস্থা করা হবে। দেবাশিসবাবু বলেন, “এ বার আশা করি বিসর্জনের সংখ্যা ১০০ ছুঁয়ে যাবে। শুধু নিউটাউন নয়, সল্টলেক ও রাজারহাট গ্রামীণ এলাকার পুজো, এমনকী পূর্ব কলকাতার প্রতিমাও যেন এই ঘাটে বিসর্জন
হয় সেরকম করেই পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।”
অন্য দিকে, ভিআইপি রোডের গোলাঘাটার দেবীঘাট সম্পর্কে এলাকার বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “গত বছরে শেষ মুহূর্তে ঘাটের সৌন্দর্যায়ন হয়েছিল। তাই কিছু খামতি ছিল। বিসর্জনের সময় কিছু হয়তো অসুবিধা হয়েছিল।
এ বার সব দিক থেকে পরিকাঠামো উন্নত হয়েছে।”
নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ওয়ানের নিউটাউন থানার পিছনে বিশাল জলাশয়ের মধ্যেই তৈরি হয়েছে বিসর্জনের ঘাট উপাসনা। হিডকো সূত্রে খবর, রাতে বিসর্জন যেন সুষ্ঠুভাবে হয় তাই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিসর্জন ঘাটে বেশি গাড়ি দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেবাশিসবাবু বলেন, “এ বারের এই ঘাটে বিসর্জনের সময় প্রধান আকর্ষণ হল ধুনুচি নাচ। প্রতিমা বিসর্জনের আগে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা হবে। তবে একটি পুজো কমিটি থেকে এক জনই ধুনুচি নাচে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।”
প্রতিমা বিসর্জন করতে এসে জলে নেমে অনেক সময়ই নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। হিডকোর এক অফিসার জানিয়েছেন, এই ঘাটে নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডুবুরিও। এ ছাড়াও বিসর্জনের পরই কাঠামো এবং ফুল যাতে জল থেকে তুলে নেওয়া হয় তার জন্য সব সময় কয়েক জন নজর রাখবেন।
অনেকটা উপাসনা ঘাটের মতোই সেজে উঠছে ভিআইপি রোডের ধারে গোলাঘাটার দেবীঘাটও। প্রায় মজে যাওয়া একটি নয়ানজুলিকে সংস্কার করে গত বছরই বিসর্জনের ঘাট তৈরি করেছিল দক্ষিণ দমদম পুরসভা। দ্রুত গতিতে এই ঘাট তৈরির জন্য পরিকাঠামোয় খামতি ছিল। বিশেষ করে ঘাটে যে সব গাড়ি বিসর্জনের জন্য আসছিল সেই গাড়িগুলো ঠিকমতো দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছিল না। তা ছাড়া পর্যাপ্ত আলোও ছিল না। এলাকার বিধায়ক সুজিত বসু জানাচ্ছেন, এ বার পর্যাপ্ত আলো লাগানো হয়েছে। ঘাটের পাশে গাড়ি দাঁড়ানোর জায়গাও প্রশস্ত করা হয়েছে। যাঁরা বিসর্জন দেখতে আসবেন তাঁদের জন্য ঘাটের আশপাশে বসার জায়গা থাকছে। সুজিতবাবুর আশা, এ বার শুধু দমদম পার্ক বা লেকটাউন এলাকাই নয়, দমদম বা উল্টোডাঙার প্রতিমাও বিসর্জন হবে।