মশাবাহিত রোগ, বিশেষত ডেঙ্গির প্রকোপ আটকাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ বা এলাকায় মশা মারার ধোঁয়া দেওয়া, ঝোপজঙ্গল সাফ, জমা জল সরানো তো আছেই। এটাই প্রতি বছরের চেনা পন্থা। সেখানে এ বার কিছুটা বদল আসতে চলেছে। যে সব জায়গায় মশা নিধনের কাজ হচ্ছে, সেই এলাকার হাল-হকিকত জানতে ছবি তুলতে হচ্ছে পুরকর্মীদের। পাশাপাশি কোন এলাকায় কবে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ হবে, তা ওয়েবসাইটে আগাম জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের।
শুধু কাজের উপরে নজরদারি চালানোই নয়, মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এমন ভাবেই পরিকল্পনা করে এগোতে চাইছেন নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। সংস্থা সূত্রের খবর, এক জন পতঙ্গবিদ নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিটি এলাকায় মশার উৎস খুঁজে বার করে তার লার্ভা ধ্বংস করা এবং জমা জল সরানোর কাজ চলছে। পাশাপাশি কোন কোন এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ গত কয়েক বছরে বেড়েছে বা সেই আশঙ্কা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে সেখানে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। জনমত গঠনে জোর দেওয়া হচ্ছে সচেতনতা প্রচারেও।
এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। কোন এলাকায় কবে কাজ হবে, তা আগাম জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। এতে কী ধরনের কাজ হচ্ছে, সে সম্পর্কে তাঁরাও ওয়াকিবহাল থাকতে পারছেন।
প্রসঙ্গত, বাসিন্দাদের একাংশ একাধিক বার অভিযোগ করেছেন, বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ বা জমা জল সরানোর কাজ নিয়মিত হয় না। একটি এলাকায় এক বার ধোঁয়া দেওয়া হয়ে গেলে বেশ কিছু দিন পরে সেখানে ফের ধোঁয়া দেওয়া হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, নির্মীয়মাণ বাড়ি বা অফিসের জন্য যে চৌবাচ্চা বানানো হয়, তার জলও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিষ্কার করা হয় না। এই সব দিকে নজরদারিও কম।
তবে এনকেডিএ সূত্রের খবর, নিয়মিত মশা তাড়ানোর কাজ হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর মশার তেল ছড়ানো বা ধোঁয়া দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ ওঠায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, মশা নিয়ন্ত্রণের কাজের ছবি তুলে রাখতে হবে। এর পাশাপাশি বাসিন্দাদের আগেভাগেই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোন এলাকায় কবে কাজ হবে। ফলে কাজের গতিপ্রকৃতির উপরে নজর রাখা ছাড়াও বাসিন্দারা কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবেন। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে তাঁদের সচেতনতাও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।