পরিচয়পত্র গলায় ঝোলান না কোনও পুরকর্মী‌ই

কলকাতা পুরসভায় স্থায়ী কর্মী-অফিসার রয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। সকলের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র করে দিয়েছে পুর প্রশাসন। কাজের সময়ে সেই পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখারই নিয়ম।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০১
Share:

—ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভায় স্থায়ী কর্মী-অফিসার রয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। সকলের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র করে দিয়েছে পুর প্রশাসন। কাজের সময়ে সেই পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখারই নিয়ম। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, দালাল-রাজ বন্ধ করার লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা। কিন্তু অভিযোগ, এ ব্যাপারে পুর কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও শতকরা এক জনও সেই নিয়ম মানেন না। ফলে প্রতিদিন যাঁরা বিভিন্ন রকম পরিষেবা পেতে পুরসভার সদর দফতর এবং ওয়ার্ড অফিসগুলিতে আসেন, তাঁদের পক্ষে কে পুরসভার কর্মী আর কে নন, তা জানা বহু ক্ষেত্রেই মুশকিল হয়। সেই ছুতোয় অনেকেই দালালের হাতে পড়েন।

Advertisement

কাজের সময়ে পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখার নিয়ম যাতে মানা হয়, সে ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে না কেন? পুর প্রশাসনের একাধিক কর্তা মেনে নিয়েছেন, পুরকর্মীরা সকলেই কোনও না কোনও ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার সাহস দেখানো যায় না। খোদ পুর কমিশনারও তাঁর নির্দেশ প্রয়োগ নিয়ে কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছেন। ওই কর্তারা মনে করছেন, পুরবোর্ডের শীর্ষ কর্তারা এ ব্যাপারে সজাগ হলে কাজে আরও সুবিধা হবে।

পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতিটি দফতরের কর্মী-অফিসারদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং তিনি কোন পদে কর্মরত— তার বিস্তারিত দিয়ে সচিত্র পরিচয়পত্র করা হয়েছে আগেই। তা গলায় ঝোলানোর জন্য কেএমসি ছাপ মারা ফিতেও দেওয়া হয়েছে। কার্ড পিছু পুরসভার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ টাকা। পরিচয়পত্র বানাতে খরচ হয়েছে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি। কিন্তু অভিযোগ, মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও কেউই অফিসের সময়ে সেগুলি গলায় ঝোলান না।

Advertisement

এস এন ব্যানার্জি রোডে কলকাতা পুরসভার সদর দফতর ছাড়াও শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ড এলাকায় পুরসভার বহু অফিস রয়েছে। গত কয়েক

মাসে পুর পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ঘটেছে একাধিক প্রতারণার ঘটনা। তার পরেই ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ-সহ একাধিক মেয়র পারিষদ মনে করছেন, এ বার অফিসের সময়ে পুরকর্মী ও অফিসারদের পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করার পথে এগোনো দরকার। অতীনবাবু বলেন, ‘‘পুর ভবন এবং ওয়ার্ড অফিসগুলিতে ঘুরে

বেড়ানো অনেকেই নিজেদের পুরসভার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাঁরা পুরসভার কর্মী নন। পরিচয়পত্র ঝোলানো থাকলে মানুষ সহজেই দালালদের চিহ্নিত করতে পারবেন।’’

একই অভিমত সিপিএমের দলনেত্রী, কাউন্সিলর রত্না রায়মজুমদারেরও। তিনি বলেন, ‘‘পুর অফিসে প্রায়ই দালাল-দৌরাত্ম্যের অভিযোগ ওঠে। পরিচয়পত্র ঝোলানো বাধ্যতামূলক হলে তাঁদের সহজে ধরা যাবে।’’ মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কাজের সময়ে পুরসভার কর্মী ও অফিসারদের পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে। এর পরে আমরা তাঁদের নিয়মিত হাজিরার দিকেও নজর রাখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন