পুজো প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের ঢল। ছবি তোলার হিড়িক। ছবি: পিটিআই।
কালো মেঘের চাদর সরে গিয়ে নীল আকাশের দেখা মিলেছে কলকাতা শহরে। রোদ ছিল সকাল থেকেই। ভ্যাপসা গরমও সেই ভাবে ছিল না। মনোরম আবহাওয়ায় ঢাকের তালে উৎসবের আনন্দ যেন কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে! ষষ্ঠীতে বোধনের মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজোর আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু আশ্বিনের চেনা এই আকাশের উজ্জ্বল রং কত ক্ষণ স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সারা দিন সংশয় ছিলই। তবে সন্ধ্যায় সেই সংশয়ের মেঘ কেটেছে! ষষ্ঠীর রাতে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
গত সপ্তাহেই মাত্র ছ’ঘণ্টার বৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছে গোটা শহর। কিন্তু পুজোর মধ্যে সে রকম বড়মাপের দুর্যোগের আশঙ্কা না-থাকলেও, আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, দিনে দু’-এক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছেই। কিন্তু ষষ্ঠীর সকালে কলকাতার আকাশ রোদ ঝলমলেই ছিল। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিকেলের দিকে আলিপুর বা দক্ষিণ কলকাতার আকাশে মেঘ খানিক বেগড়বাঁই করেছে বটে। বেশ খানিক ক্ষণ মুখ ভার করে ছিল সে। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই মেঘ কেটে গিয়েছে।
ফলে উত্তর বা দক্ষিণ, যে দিকে খুশি নিশ্চিন্তে ‘প্যান্ডেল হপিং’য়ে বেরোনো যাবে বলেই আশ্বস্ত করছেন আবহবিদেরা। তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, পুজো ভেস্তে দেওয়ার মতো বৃষ্টি অন্তত রবিবার হবে না কলকাতা শহরে। যে হেতু মাথার উপর কালো মেঘের চোখরাঙানি নেই, তাই দিব্যি সাজগোজ করে ঠাকুর দেখতে বেরোতে পারেন।
তবে বর্ষা এখনও বাংলা ছাড়েনি। আর স্থানীয় মেঘ কখন কোথায় ভোল পাল্টে ফেলবে, তা-ও নিখুঁত ভাবে জানা সম্ভব নয়। তাই আবহবিদদের মত, সঙ্গে একখানা ছাতা রাখা ভালই। তবে যদি কোথাও বৃষ্টি নামেও, তা বেশি ক্ষণ স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন আবহবিদেরা। পাশাপাশি এটাও সত্যি যে, পুজোয় বাঙালির হুজুগ দমানোর দম আবহাওয়ারও নেই। থই থই জলে ভাসা শহরে, হাঁটু জলের প্যান্ডেলেও যে বাঙালি দাপিয়ে বেড়াতে পারে, সেই দৃশ্য তো গত মঙ্গলবারই বানভাসি কলকাতা দেখেছে।
ষষ্ঠীর সকালে কলকাতার পড়শি হাওড়ার কিছু জায়গায় দু’-এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। তার থেকে অনেকেরই অনুমান ছিল, হয়তো কলকাতাতেও বরুণ দেব খেলা দেখাবেন! উত্তর কলকাতায় বৃষ্টি হলেও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। দুপুরের দিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর হালকা থেকে মাঝারি ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল কলকাতা (মূলত দক্ষিণে), মহানগর লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কিন্তু সেই ভাবে কোথাও বৃষ্টি হয়নি শহরে।
ষষ্ঠীর সন্ধ্যাতেও যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, তা মোটামুটি পরিষ্কার উপগ্রহচিত্র থেকে। তাতে দেখা গিয়েছে, সন্ধ্যার পর থেকে দক্ষিণের বেহালা, পূর্বের কসবা, মধ্যের চাঁদনি চক বা উত্তরের শ্যামবাজার, কোথাওই সে ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। ফলে নিশ্চিন্তে দক্ষিণের চেতলা অগ্রণী, ম্যাডক্স স্কোয়্যার বা উত্তরের টালা প্রত্যয়, বাগবাজার সর্বজনীন, যে দিকে খুশি যেতে পারেন।