No such Traffic control or monitoring available at Night

রাতের পথ অরক্ষিতই

টহলদার গাড়ি, থানার কিয়স্ক বা নজরদার ক্যামেরা— রয়েছে সব কিছুই। তবু রাতের শহরে বেপরোয়া গাড়িতে লাগাম পরানো যাচ্ছে না কোনও মতেই। অভিযোগ, দিনের বেলায় অবাধ্য গাড়ি ধরতে পুলিশ যতটা সচেষ্ট, রাতে তার সিকিভাগ চেষ্টাও চোখে পড়ে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২০
Share:

চলো-নিয়মমতে: লেখাই সার। ঠিক জায়গায় থামার এই নির্দেশ কেউ শুনছেন কি? ছবি: রণজিৎ নন্দী

টহলদার গাড়ি, থানার কিয়স্ক বা নজরদার ক্যামেরা— রয়েছে সব কিছুই। তবু রাতের শহরে বেপরোয়া গাড়িতে লাগাম পরানো যাচ্ছে না কোনও মতেই। অভিযোগ, দিনের বেলায় অবাধ্য গাড়ি ধরতে পুলিশ যতটা সচেষ্ট, রাতে তার সিকিভাগ চেষ্টাও চোখে পড়ে না। রাত যত বাড়ে, রাস্তায় ততই কমতে থাকে পুলিশের সংখ্যা। আর সেই সুযোগেই রাতের পথে দাপিয়ে বেড়ায় বেপরোয়া মোটরবাইক থেকে গাড়ি ও লরি। গাড়িচালকদের মধ্যে সচেতনতা আনতে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্লোগান চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সচেতনতা যে এখনও তিমিরেই, শনিবার শেষ রাতে লেক মার্কেট এলাকার দুর্ঘটনাই তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এ প্রসঙ্গে টলিউডের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফকে আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। না হলে এই ধরনের ঘটনা আটকানো যাবে না।’’

Advertisement

ওই ঘটনায় এক অভিনেত্রীর মৃত্যুর পরে রাতের শহরে পুলিশি নজরদারির অভাব নিয়ে পুরনো অভিযোগই ফের উঠে এসেছে। কেন ওই বেপরোয়া গাড়িটিকে পুলিশকর্মীরা আটকালেন না, উঠেছে সেই প্রশ্নও। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দক্ষিণ কলকাতার একটি হোটেল থেকে বার হওয়ার পরে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরেছে গাড়িটি। কিন্তু কোথাও টহলদার পুলিশ গাড়িটিকে আটকায়নি বলেই অভিযোগ। লেক মলের সামনে ওই রাস্তায় কেন গার্ডরেল বসিয়ে রাতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয় না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।

আরও পড়ুন...
শর্ত মানলে তবে খোলে এয়ারব্যাগ

Advertisement

পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে ব্রেবোর্ন রোড উড়ালপুলের মুখে উল্টে যায় একটি মিনিবাস। মৃত্যু হয় দু’জনের। মাসখানেক আগে গভীর রাতে বেপরোয়া মোটরবাইক চালিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের দৌহিত্র রণদীপ বসু। তিনি এখনও হাসপাতালে।

লালবাজার সূত্রের খবর, গত দু’সপ্তাহে রাতের শহরে দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বেপরোয়া গতির বলি পাঁচ জন। যার শেষতম সংযোজন লেক মলের ঘটনা। যেখানে একটি বেসরকারি হোটেল থেকে ফেরার পথে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি। মৃত্যু হয় সহযাত্রী সোনিকা সিংহ চৌহান নামে এক অভিনেত্রীর। বিক্রমই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পুলিশকে বিক্রম অবশ্য বলেছেন, অন্য একটি গাড়ি তাঁর গাড়িটিকে বাঁ দিকে চেপে দেওয়ায় তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।

লালবাজার সূত্রের খবর, রাতের শহরে পুলিশের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে সিসিটিভি। গত এক বছরে রাতে ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের রাখা হচ্ছে। কিন্তু তা যথেষ্ট কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী, রাস্তার মাঝখানে গার্ডরেল বসিয়ে গাড়ির গতি কমানোর কৌশল কতটা কার্যকর, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্তা রাতের শহরে টহলদারি বাড়ানোয় জোর দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, মোড়ে মোড়ে উর্দিধারীদের দেখলে দুষ্ক়ৃতীদের পাশাপাশি বেপরোয়া গাড়ির চালকেরা সতর্ক হবেন। ফলে যানশাসনে সুবিধা হবে। নিয়ন্ত্রণে থাকবে গাড়ির গতি। কিন্তু শনিবারের ঘটনা দেখিয়ে দিল, উর্দিধারীরা পথে থাকলেও কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন