Forensic

DNA: ডিএনএ পরীক্ষায় উন্নত পরিকাঠামো এ রাজ্যেও

২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের ফরেন্সিক পরীক্ষাগারের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করা হয়।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডিএনএ পরীক্ষার জন্য হায়দরাবাদ-চণ্ডীগড়ের পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার দিন শেষ! পুলিশকর্তাদের দাবি, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বেলগাছিয়া ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি পরিকাঠামোগত ভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন মামলার স্বার্থে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ রিপোর্ট তৈরি করার কাজ ওই পরীক্ষাগারেই শুরু হয়েছে বলে দাবি পুলিশকর্তাদের। সেই সঙ্গে রক্তের ‘সেরোলজি’ পরীক্ষার দু’টি ইউনিটও চালু হয়েছে সেখানে।

Advertisement

২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের ফরেন্সিক পরীক্ষাগারের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে বেলগাছিয়া ফরেন্সিক পরীক্ষাগারের তৎকালীন প্রশাসনিক প্রধান, এডিজি হরমনপ্রীত সিংহের তত্ত্বাবধানে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালে ওই উন্নয়নের হাল ধরেন এডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। সিনিয়র বিজ্ঞানী হরেন্দ্রনাথ সিংহের নেতৃত্বে নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে চালু করা হয় ডিএনএ পরীক্ষা।

বিভিন্ন মামলার সূত্রে অভিযোগকারী বা অভিযুক্তের বয়ানের সত্যতা যাচাই করতে এই ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। মূলত রক্ত, দাঁত, চুল-সহ শরীরের যে কোনও অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ রিপোর্ট তৈরি করা হয়। তেমনই খুন ও দুর্ঘটনার মামলার তথ্যপ্রমাণের সূত্রে ‘সেরোলজি’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রক্তের পরীক্ষা।

Advertisement

বেলগাছিয়া ফরেন্সিক পরীক্ষাগারের সিনিয়র বিজ্ঞানী হরেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্যের ডিএনএ পরীক্ষার পরিকাঠামো এখন বিদেশের পরীক্ষাগারের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। কেন্দ্রের যে কোনও পরীক্ষাগারের সমকক্ষ এটি।’’

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানান, ভিন্‌ রাজ্যের অধিকাংশ পরীক্ষাগারে শরীরের ১৫ থেকে ১৮টি অংশ থেকে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করার পরিকাঠামো রয়েছে। সেখানে বেলগাছিয়া ফরেন্সিক পরীক্ষাগারে শরীরের ২৩টিরও বেশি অংশ থেকে নেওয়া নমুনার পরীক্ষা করার পরিকাঠামো রয়েছে। যত বেশি অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যাবে, রিপোর্ট ততই স্পষ্ট হবে। তাই উন্নতমানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, এত দিন ভিন্‌ রাজ্যে নমুনা পাঠিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হত। কারণ, রিপোর্ট তৈরিতে ন্যূনতম চার থেকে ছ’মাস সময় প্রয়োজন। তাই একাধিক রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় অথবা ভিন্‌ রাজ্যের ল্যাবরেটরিতে নমুনা জমা হলে রিপোর্ট আসতেও দেরি হয়। কিন্তু এখন রাজ্যের নিজস্ব ডিএনএ পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরি হওয়ায় বহু মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত এগোবে। ডিএনএ রিপোর্টের জন্য বেশি দিন অপেক্ষাও করতে হবে না। রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির বর্তমান প্রশাসনিক প্রধান, এডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন,ধাপে ধাপে রাজ্য ফরেন্সিক পরীক্ষাগারগুলির উন্নয়ন করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে গুরুত্ব অনুযায়ী ডিএনএ ও সেরোলজি বিভাগ চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতা ও জলপাইগুড়িতে সেরোলজি পরীক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘অতীতে ডিএনএ ও সেরোলজি পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে এক দিকে যেমন খরচ বাড়ত, তেমনই বহু মামলার শুনানি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়ে যেত। বর্তমানে এ রাজ্যে উন্নত মানের পরিকাঠামোয় ডিএনএ এবং সেরোলজি পরীক্ষার ব্যবস্থা হওয়ায় প্রায় সব সমস্যার সমাধান সহজতর পথে এগোচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন