kali Puja 2022

কন্ট্রোল রুম চালুর আগেই শুরু হয়ে গেল শব্দবাজির দাপট!

সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাই কোর্ট, জাতীয় পরিবেশ আদালতের তরফে শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এত পরিমাণ শব্দবাজি কোথা থেকে এল?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৮:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

শব্দবাজি সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণের জন্য এখনও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুম চালু হয়নি। আজ, সোমবার থেকে তা চালু হবে। কিন্তু তার আগে রবিবার থেকেই যে হারে শহর, শহরতলি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শব্দবাজি ফেটেছে, তাতে আজ এবং আগামী ক’দিন কী পরিস্থিতি হতে চলেছে, তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সাধারণ নাগরিক, পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে।

Advertisement

কিন্তু তার থেকেও যে প্রশ্নগুলি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, তা হল, সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাই কোর্ট, জাতীয় পরিবেশ আদালতের তরফে শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এত পরিমাণ শব্দবাজি কোথা থেকে এল? কেন আদালতের রায়ের পরেও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণ করা গেল না? কেন প্রতি বছর নাগরিকদের শব্দ-সন্ত্রাসের শিকার হতে হচ্ছে? এক পরিবেশবিজ্ঞানীর মতে, ‘‘খোলা বাজারে বেআইনি বাজি বিক্রিহচ্ছে। সাধারণ মানুষ সে কথা জানলেও যদি পুলিশ বা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তা না জানতে পারে, সেটা তাদের ব্যর্থতা!’’ পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত জানাচ্ছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতায় এই বছরের কালীপুজো অন্য দিক থেকে ব্যতিক্রমী। কারণ, কালীপুজোর আগের দিন থেকেই এত শব্দবাজি ফেটেছে যে, তা সচরাচর দেখা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘এটা সম্পূর্ণ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ব্যর্থতা। পর্ষদ প্রতি বার শব্দবাজি আটকানোর বিষয়ে অনেক দাবি করে। বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যায় না। এ বার তো সরাসরি আদালতের নির্দেশের অবমাননা করা হল।’’

এ বিষয়ে রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া রবিবার বলেছেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সর্বতো ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের দফতর প্রতিনিয়ত পুলিশ, পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’ যার পরিপ্রেক্ষিতে এক পরিবেশবিজ্ঞানী বলছেন, ‘‘পরিবেশমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে লাভ নেই। কারণ, তিনি একা তো কিছু করতে পারবেন না। কিন্তু শব্দদূষণ দেখাটা যাদের দায়িত্ব, সেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কী করছে? এত বাজি এল কোথা থেকে, সেই জবাব আগে পর্ষদ ও পুলিশ দিক।’’ কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, পর্ষদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও শব্দবাজির দাপট রোখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘রাজ্যে কোথায় শব্দবাজি তৈরি হচ্ছে, বাইরে থেকে কী ভাবে তা রাজ্যে আসছে, এটা বছরভর নজর রাখা দরকার। সেটা হয় না বলেই তার ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। এত বছরেও কালীপুজোয় শব্দবাজির দাপট বন্ধ করা গেল না, পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এটাই লজ্জার বিষয় হওয়া উচিত।’’

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে প্রতি বছরের মতো এ বারেও বাজি সংক্রান্ত যে কোনও অভিযোগ গ্রহণের জন্য আজ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কন্ট্রোল রুম চালু করছে। এ দিন সন্ধ্যায় সেই কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রীরও। একই সঙ্গে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর কন্ট্রোল রুমও এ দিন চালু হচ্ছে। এ বছর সংগঠনের তরফে একটি নতুন নম্বর চালু করা হয়েছে (৬২৯০৯০১৮৬২), যেখানে বছরভরই শব্দদূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ জানানো যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন