চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কের বিপরীত ছবির সাক্ষী থাকল চেতলার বিকি সাউয়ের পরিবার।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর পরিবারের হাতে আক্রান্ত চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল ভাঙচুর হওয়ার খবর যখন সংবাদের শিরোনামে, তখন চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কের বিপরীত ছবির সাক্ষী থাকল চেতলার বিকি সাউয়ের পরিবার।
পাঁচ দিন ধরে একটানা জ্বরে ভুগছিলেন বছর কুড়ির বিকি। পরিবারের দাবি, জ্বরের চিকিৎসার পরেও তা কমেনি, উপরন্তু নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছিল। তখনই পরিবার বিকিকে টালিগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করায়। সেই মতো তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন অরিজিৎ রায়চৌধুরী। রক্তপরীক্ষায় ধরা পড়ে ম্যালেরিয়া। বাইরের থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনা রিপোর্টে ম্যালেরিয়া নেগেটিভ ছিল বলে জানান ওই চিকিৎসক। নিশ্চিত হতে ফের রক্তপরীক্ষা হয়। একই রিপোর্ট আসে। তার ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু হয়। সাড়া দেন রোগী। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হতে তাঁকে আইসিসিইউ-এ স্থানান্তরিত করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে দেখে পরিবারের সম্মতি নিয়ে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় বিকিকে।
অরিজিৎবাবু বলেন, ‘‘বিকির শারীরিক অবনতির কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছিল, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোমের (এআরডিএস) শিকার তিনি। এই অসুখে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সাধারণত কোনও সংক্রমণের রোগীর এআরডিএস-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ওঁর ক্ষেত্রে কারণ ছিল ম্যালেরিয়া। দশ দিন ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসার পরে বিকি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।’’ আরোগ্য মেটারনিটি অ্যান্ড নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘‘পরিবারটি আর্থিক ভাবে অসচ্ছলতার কথা জানানোয় আমরা ওঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’’
চেতলায় পানের দোকান চালান বিকির বাবা। বিকির দাদা বিকাশ বলছেন, ‘‘ডাক্তারবাবুর এই সাহায্যের কথা আমাদের পরিবার সারা জীবন মনে রাখবে।’’