OBC Reservation

উচ্চ মাধ্যমিকে ওবিসি নিয়ে তথ্যে আপত্তি

প্রতীচী ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত গবেষক সাবির আহমেদের প্রশ্নটি ছিল, ২০১১ থেকে ২০২৫এর মধ‍্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ‍্য শাখায় জেলায় জেলায় ক’জন করে নাম নথিভুক্ত করেন, ক’জন পরীক্ষায় বসেন এবং পাশ করেন?

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ০৮:৫৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ওবিসি নীতি নিয়ে জটে এ রাজ‍্যের উচ্চ শিক্ষা ব‍্যবস্থা ঘিরে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কিন্তু দেশের তথ‍্য অধিকার আইনে (আরটিআই) বছর বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরিসংখ্যানে সামাজিক বিন‍্যাস সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে জবাব দিচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সম্প্রতি এ বিষয়ে এক গবেষকের প্রশ্ন পত্রপাঠ নাকচ করে দিয়েছে তারা। প্রথমে সংসদের উপসচিব (আইন) তথা তথ‍্য আধিকারিক (এসপিআইও) ও পরে সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য প্রশ্নটি খারিজই করে দিয়েছেন।

প্রতীচী ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত গবেষক সাবির আহমেদের প্রশ্নটি ছিল, ২০১১ থেকে ২০২৫এর মধ‍্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ‍্য শাখায় জেলায় জেলায় ক’জন করে নাম নথিভুক্ত করেন, ক’জন পরীক্ষায় বসেন এবং পাশ করেন? এবং এই তিনটি তালিকার সামাজিক বিন‍্যাস কী? সাবিরের কথায়, “কয়েক বছর যাবৎ উচ্চ মাধ‍্যমিকের ফল প্রকাশের সময়ে ওবিসি (অ‍ন‍্য অনগ্রসর শ্রেণি) বা সংখ্যালঘুদের পরিসংখ্যান থাকছে না। রাজ‍্যে ওবিসি সমীক্ষা নিয়ে যে আলোচনা চলছে তার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ শিক্ষার পথে বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব বুঝতেও এই পরিসংখ্যান জানা জরুরি। কিন্তু আমার প্রশ্নটি ওঁরা আমল দিলেন না।” বিষয়টি রাজ‍্যের তথ‍্য কমিশনকেও জানান সাবির। সংসদের তরফে চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশ্নকর্তা কেন এই প্রশ্ন করেছেন বলেননি। আগেও তিনি এই ধরনের প্রশ্ন করেছিলেন। আরটিআই আইনের ৬(২) ধারা অনুযায়ী, কোনও প্রশ্ন করার কারণ কী তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানতে চাইতেই পারেন না। সাবির জানাচ্ছেন, এর আগে তাঁর প্রশ্নের প্রাপ্তিস্বীকারটুকু ছাড়া উত্তর দেয়নি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

সংসদের তরফে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সবিস্তার এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া শ্রমসাধ‍্য এবং সমস‍্যাজনক। এর জন‍্য সংসদের বিপুল লোকবল কাজে লাগাতে হবে। চিরঞ্জীব বলেন, “উচ্চ মাধ‍্যমিক শিক্ষা সংসদ এখন সেপ্টেম্বরে নতুন সিমেস্টারের আয়োজনে ব‍্যস্ত। তা ছাড়া, এই পরিসংখ্যান শেষ বছর দুয়েকে আমরা কম্পিউটারে তুলেছি। পুরনো পরিসংখ্যান কম্পিউটারে নেই। প্রশ্নকর্তা গবেষণা না কী কারণে জানতে চাইছেন, তা-ও বলেননি।”

হিউম‍্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ মঞ্চের অধিকর্তা তথা বিশিষ্ট তথ‍্য অধিকার কর্মী ভেঙ্কটেশ নায়েকের কথায়, “আরটিআই-এর ৬(২) ধারা বলছে, প্রশ্নকর্তা কখনওই প্রশ্নের কারণ দর্শাতে বাধ‍্য নন। ২০১৪-য় এই আইনের ধারা তুলে ধরে মাদ্রাজ হাই কোর্ট তাদের একটি রায় সংশোধন পর্যন্ত করে। তা ছাড়া, আরটিআই আইনের ৪(১)(এ) ধারা বলছে, এই আইনে প্রশ্নের উত্তর দিতে সরকারি কর্তৃপক্ষ মাত্রেই সব পরিসংখ্যান সাজিয়ে গুছিয়ে সারণিবদ্ধ করে রাখতে বাধ‍্য।” ভেঙ্কটেশের মতে, উচ্চ মাধ‍্যমিক পাশ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান তো কেউ এই পরীক্ষায় পাশ করেছেন কি না, যাচাই করতেও লাগে!

গোটা দেশের নিরিখেই আরটিআই মেনে উত্তর দিতে পিছিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ। আরটিআই একটি মৌলিক অধিকার। সাবির বলেন, “পরিসংখ‍্যান নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে নানা স্তরে তথ‍্য দিতে না চাওয়ার প্রবণতা মুশকিলের। হয়তো হাই কোর্টেই আমাদের যেতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন