প্রতীকী ছবি।
তেঘরিয়ার বৃদ্ধ দম্পতিকে হামলার ঘটনায় সোমবার গ্রেফতার হল দু’জন। ধৃতদের নাম প্রবুদ্ধ গুপ্ত ও মধু মণ্ডল। প্রবুদ্ধ সম্পর্কে বৃদ্ধা রত্না চক্রবর্তীর বোনের জামাই। মধু আনাজ বিক্রেতা।
তদন্তে নেমেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায় পুলিশ! তদন্তকারীদের দাবি, তেঘরিয়ার নন্দনকাননে এয়ার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন মার্কেটিং ম্যানেজার আলোকরঞ্জন চক্রবর্তী এবং তাঁর স্ত্রী রত্নার উপরে হামলার ঘটনায় যাঁরা ছুটে গিয়েছিলেন, সেই আত্মীয়দেরই এক জন লোক ভাড়া করে বৃদ্ধকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে চেয়েছিলেন।
গত শনিবার রাতে দম্পতির ঘরে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতী। মাথায় ভারী অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হন আলোকরঞ্জনবাবু। রত্নাদেবীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এ দিন পুলিশ জানায়, হামলাকারী ছিল এক জনই। ঘটনাক্রমের নিরিখে প্রথম থেকেই লুটের উদ্দেশ্য খারিজ করেছিল বিধাননগর সিটি পুলিশ। তাদের বক্তব্য ছিল, পুরনো শত্রুতার কারণেই এই হামলা।
পুলিশ জেনেছে, নেশার আসর বসানো নিয়ে আলোকরঞ্জনবাবুর সঙ্গে তিক্ততা হয়েছিল বাড়ির পিছন দিকে বসবাসকারী এক আনাজ বিক্রেতার। পুলিশের দাবি, বৃদ্ধকে শিক্ষা দিতে ওই বিক্রেতাকে ৫০,০০০ টাকা দেবে বলেছিল প্রবুদ্ধ। অগ্রিম হিসেবে ২৫ হাজার দেয়। প্রায় ২০-২৫ দিন আগে করা পরিকল্পনায় স্থির হয়, দম্পতিকে ভয় দেখাতে হবে। পুলিশের দাবি, হামলার উদ্দেশ্য ছিল, আমেরিকাবাসী মেয়েকে আতঙ্কিত করা। যাতে ভয় পেয়ে তিনি বাড়ি বিক্রি করে দেন অথবা তাঁর সঙ্গে বাবা-মাকে নিয়ে যান। দু’ক্ষেত্রেই ওই আত্মীয়দের লাভ। যেহেতু লাগোয়া বাড়ি, তাই প্রবুদ্ধেরা কম টাকায় বাড়ি কিনে নিতে পারবে। অথবা বাড়ি দেখভালের দায়িত্ব তাদের দেওয়া হলে পরবর্তীকালে বাড়িটি দখল করে নেওয়া যাবে। পুলিশ সূত্রের খবর, এক বছর আগে ছাদের পাঁচিল উঁচু করা নিয়ে ওই আত্মীয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় আলোকরঞ্জনবাবুর। যার প্রেক্ষিতে কথাবার্তা বন্ধ ছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ওই আনাজ বিক্রেতা দোষ কবুল করেছে। ওই আত্মীয়ের পরিজনেরা অবশ্য পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, দোষ কবুল করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ষড়যন্ত্র করে ওই আত্মীয়কে ফাঁসানোরও চেষ্টা হচ্ছে।