Lawho Gouranger Naam Rey's Trailer Has Been Released

চৈতন্যদেবের প্রেমজীবন বড়পর্দায়, প্রথম কীর্তন গাইলেন অরিজিৎ! কেন তাঁকেই বাছলেন ইন্দ্রদীপ?

এর আগে রানা সরকারের ‘মানবজমিন’ ছবিতে প্রথম রামপ্রসাদী গান গেয়েছিলেন গায়ক। এ বার প্রযোজকের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’তে কীর্তন গেয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৩০
Share:

‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’তে অরিজিৎ সিংহ প্রথম কীর্তন গাইলেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের সুরে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘মানবজমিন’ ছবিতে অরিজিৎ সিংহের কণ্ঠে প্রথম রামপ্রসাদী গান। বাংলা একটু হলেও অবাক। পরে সেই গান লক্ষাধিক শ্রোতা সাগ্রহে শুনেছেন। গায়কের সেই ধারা অব্যাহত। এ বার তিনি প্রথম কীর্তন গাইলেন! সৌজন্যে ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবি।

Advertisement

ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের সুরে অরিজিতের কণ্ঠে শোনা যাবে ‘ক্ষণে গোরাচাঁদ ক্ষণে কালা’ কীর্তনাঙ্গের গান। গানটি এখনও মুক্তি পায়নি। ছবির প্রথম ঝলকে খুব সামান্যই শোনা গিয়েছে সে গান। এ-ও খবর, ছবিতে মাত্র একটি গানই গেয়েছেন অরিজিৎ। চৈতন্যদেব এবং লক্ষ্মীপ্রিয়ার প্রেম-বিবাহ এই গানের মধ্যে দিয়ে দেখিয়েছেন ছবির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ছবির অধিকাংশ গান শোনা যাবে জয়তী চক্রবর্তী এবং পদ্মপলাশের কণ্ঠে।

মাত্র একটি গানের জন্য কেন অরিজিৎকে বাছলেন সুরকার ইন্দ্রদীপ? আরও কীর্তনাঙ্গের গান তাঁকে দিয়ে গাওয়াবেন ভেবেছিলেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম-কে ইন্দ্রদীপ বলেছেন, “অরিজিৎকে কেউ বাছেনি। আমরা এমন একটা ছবিতে কাজ করেছি যেখানে ঈশ্বর কিছু মানুষকে বেছে নিয়েছেন, কে কে তাঁর কথা বলবেন। যাঁদের বেছে নেওয়া হয়নি তাঁরা কি মন্দ? একেবারেই না। এই ছবির জন্য যাঁরা পূর্বনির্ধারিত, তাঁরাই দায়িত্বপালন করেছেন। যেমন, জয়তী চক্রবর্তী, পদ্মপলাশ এবং অরিজিৎ সিংহ।” তিনি এ-ও জানাতে ভোলেননি, অরিজিৎ যে কোনও রকম গানে ইন্দ্রদীপের নিশ্চিন্ত আশ্রয়স্থল। গান অনুযায়ী গায়কের প্রক্ষেপণ নিখুঁত। তবে আরও গান গাওয়ানোর কথা ভাবেননি তিনি। এ কথাও জানিয়েছেন অকপটে। চৈতন্যদেবের প্রথম জীবনের বিশেষ মুহূর্ত বিশেষ কাউকে দিয়ে গাওয়ানোর ইচ্ছা ছিল তাঁর।

প্রিয় গায়কের কণ্ঠে প্রথম কীর্তনাঙ্গের গান কেমন লাগল ইন্দ্রদীপের? বিশেষ গানের ক্ষেত্রে অরিজিৎ-ই বা নিজের গায়কি কতটা বদলেছেন? ইন্দ্রদীপের কথায়, “অরিজিৎ শুধুই প্রিয় গায়ক নন, প্রিয় মানুষ। কীর্তন ঈশ্বরচিন্তার বহিঃপ্রকাশ। আর প্রিয় মানুষের সঙ্গেই তো ঈশ্বরচিন্তা করব! ঠিক যেমন জয়তী, পদ্মপলাশ।” একই ভাবে অরিজিতের গায়কি প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে গায়ক নিজেকে যে পর্যায়ে তুলে নিয়ে গিয়েছেন, তাতে গায়কিতে বদল বা নিজেকে ভাঙার কোনও প্রয়োজনই নেই তাঁর। প্রত্যেক মুহূর্তে নিজেকে নিত্যনতুন ভাবে মেলে ধরতে ধরতে এগিয়ে চলেছেন তিনি। সঙ্গীত আর অরিজিৎ পরস্পরের পরিপূরক, সমার্থক।

আরাত্রিকা মাইতি, রানা সরকার, ঋতম সেন।

প্রথম বড়পর্দায় অভিনয়। প্রথম ছবিতেই সৃজিতের পরিচালনায় কাজ। অরিজিৎ তাঁদের অভিনীত দৃশ্য গানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করবেন। আনন্দে মেঘমুলুকে ভাসছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত ও আরাত্রিকা মাইতি। এঁরাই ছবিতে চৈতন্যদেব-লক্ষ্মীপ্রিয়া। উভয়েই বললেন, “প্রথম ছবিতে এত কিছু পাব, ধারণার বাইরে ছিল। এখন মনে হচ্ছে, সবটাই ঈশ্বরের দান। তিনি মাথার উপরে হাত রাখলে অনেক অসম্ভব সম্ভব হয়।” আরাত্রিকার আরও মত, চৈতন্যদেব ভালবেসেছিলেন লক্ষ্মীপ্রিয়াকে। অরিজিৎ প্রেমের গানের ‘রাজা’। তাই এই দৃশ্যকল্পের গানে তিনিই সেরা।

‘ক্ষণে গোরাচাঁদ ক্ষণে কালা’ গানের গীতিকার ঋতম সেন। গত বছর তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছেন ‘খাদান’ ছবির ‘কিশোরী’ গানের কারণে। গানটি লক্ষাধিক শ্রোতার প্রিয়। সেই তিনিই কীর্তনাঙ্গের গান লিখেছেন! প্রশ্ন করতেই গীতিকার জবাব দিলেন, “আমাদের কাজ সব ধরনের গান লেখা। সেটাই চেষ্টা করেছি। সৃজিতদা খুব সুন্দর করে দৃশ্যটি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ৫০০ বছর আগের পুরনো ভাষার স্বাদ যেন এই গানের কথায় পাওয়া যায়।” লিখতে গীতিকার দেখেন, তৎকালীন ব্রজবুলি, সন্ধ্যা ভাষা-সহ অনেক কিছু আরও একবার ঝালিয়ে নিতে হবে তাঁকে। দিনতিনেক সেই সময়, চৈতন্যদেব এবং ভাষা নিয়ে পড়াশোনার পর গানের কয়েকটি পঙ্‌ক্তি লিখে শোনান সৃজিত-ইন্দ্রদীপকে। সুরকার সবুজ সঙ্কেত দিতেই তাঁর সুরে গানের বাকি অংশ লিখে ফেলেন।

অরিজিতের উচ্চারণে কি ব্রজবুলি, সন্ধ্যা ভাষা আলাদা মাত্র পেয়েছে? ঋতম বলেছেন, “অরিজিৎ নিখুঁত উচ্চারণ করেছেন। যতটা আশা করেছিলাম, তার থেকেও বেশি। গেয়েছেন আরও ভাল। জানি না, এই গান কতটা বাণিজ্যিক সাফল্য আনবে। তবে বাংলা গানের দুনিয়ায় আলাদা জায়গা পাবে, এটা আমার বিশ্বাস।”

গানের প্রসঙ্গ তুলতেই চওড়া হাসি ছবির প্রযোজক রানা সরকারের মুখে। গর্বের সঙ্গে বললেন, “আমার ‘মানবজমিন’ ছবিতে অরিজিৎ প্রথম শ্যামাসঙ্গীত গেয়েছিলেন। সেই গান লক্ষাধিক শ্রোতা শুনেছেন। এ বার গায়ক প্রথম কীর্তনাঙ্গের গান গাইলেন। আশা, এই গানও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।” তিনি এ-ও জানান, তাঁর প্রায় প্রত্যেক ছবিতে অরিজিতের একটি করে গান রাখার চেষ্টা করেন। সৃজিত, ইন্দ্রদীপ তাঁকে জানান, চৈতন্যদেবের প্রেমজীবন গানে গানে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন একমাত্র অরিজিৎ। তাই তাঁকে বাছা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement