কাউন্সিলরের সামনেই হৃদ্‌রোগে মৃত্যু বৃদ্ধার

দেবাশিসবাবুর সামনে খাটের উপরেই কাত হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। ছোট মেয়ে বলেন, ‘‘মা এমন করে চলে যাবেন, বুঝতেই পারিনি। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে জানতে পারি, সব শেষ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

এলাকার কাউন্সিলরের কাছে একটা আবদার ছিল ৮৫ বছরের সরস্বতী দাসের। তাঁর ইচ্ছে, নিজের বাড়িতে বসে কাউন্সিলরকে তা শোনাবেন। আবেদনে সাড়া দিয়ে সোমবার

Advertisement

রাতে হাজরা রোডের ৬৩ নম্বর বস্তিতে ওই প্রবীণার বাড়িতে যান কাউন্সিলর দেবাশিস কুমার। তাঁর আবদারের কথা শুনে তা বাস্তবায়িত করার আশ্বাসও দেন দেবাশিসবাবু। কাউন্সিলরের আশ্বাস পেয়ে খুশি হন সরস্বতীদেবী। তার পরে হঠাৎই খাটে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বৃদ্ধা। আকস্মিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে হাজরা রোডের ওই বস্তিতে। আর এমন একটি ঘটনা তাঁর চোখের সামনে ঘটে যাওয়ায় বিস্মিত দেবাশিসবাবুও। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘এমনটাও যে ঘটতে পারে, তা এখনও ভাবতে পারছি না!’’

আগামী বছর কলকাতা পুরসভার ভোট। তাই দলীয় নির্দেশ মেনে তৃণমূলের প্রত্যেক কাউন্সিলরই এখন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করছেন। সেই কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি দেবাশিসবাবু প্রতিদিন পাঁচ জন করে বাসিন্দার বাড়িতে যাওয়ারও পরিকল্পনা করেছেন। সেই সূচি মেনেই হাজরা

Advertisement

রোডের ওই বস্তিতে সরস্বতীদেবীর বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। রাত পৌনে ন’টা নাগাদ বৃদ্ধার বাড়িতে যান। বৃদ্ধার কাছে তখন ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে। দেবাশিসবাবু জানান, সরস্বতীদেবীর তিন মেয়ে। তবে ছোট জনই মূলত তাঁর দেখাশোনা করতেন। কাউন্সিলরের কাছে বৃদ্ধার আবেদন ছিল, তাঁর অবর্তমানে ছোট মেয়ে যাতে ওই বাড়িতে থাকার সুযোগ পান, তা দেখতে হবে। পুর পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগের কথা কাউন্সিলরকে শোনাননি তিনি। নিজে পরিচারিকার কাজ করতেন বলে জানান। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘উনি বসেছিলেন খাটে। আর আমি সামনে একটা চেয়ারে। তাঁকে বললাম, কোনও চিন্তা নেই। আপনার ছোট মেয়ে এই বাড়িতেই থাকবেন। সেই কথা শুনে বেশ কিছুটা স্বস্তি পেলেন বলে মনে হল। তার পরেই ওই অঘটন।’’

দেবাশিসবাবুর সামনে খাটের উপরেই কাত হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। ছোট মেয়ে বলেন, ‘‘মা এমন করে চলে যাবেন, বুঝতেই পারিনি। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে জানতে পারি, সব শেষ।’’ এ দিন কেওড়াতলা শ্মশানে দাহ করা হয় বৃদ্ধাকে। সেখানে হাজির ছিলেন দেবাশিসবাবুও। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন