বিমানবন্দরে ৫ দিন, পাসপোর্ট-হারা বৃদ্ধা গেলেন কোথায়

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

সিসিটিভি ফুটেজে জেনিফার

পাঁচ দিন তিনি ছিলেন বিমানবন্দরের লাউঞ্জে। নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশকে জানিয়েছিলেন, পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও জানাননি কোন দেশের নাগরিক। ষাটোর্ধ্ব জেনিফার দাস এখন কোথায়, জানা যাচ্ছে না।

Advertisement

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, গত ২৯ অগস্ট মুম্বই থেকে জেট এয়ারওয়েজের উড়ানে জেনিফার কলকাতায় নামেন। জানান, পাসপোর্ট সহ যাবতীয় কিছু হারিয়ে গিয়েছে। বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের দোতলায়, ডিপার্চার এলাকায় থ্রি-সি গেটের সামনের লাউঞ্জে (যেখানে বিমানের টিকিট না থাকলেও বসা যায়) থাকতে শুরু করেন তিনি। নিরাপত্তারক্ষীদের সাহায্যে ডিপার্চার বা অ্যারাইভাল লাউঞ্জে শৌচালয়ে গিয়েছেন। জেনিফারের সঙ্গে থাকা টাকা খাবার কিনতে খরচ হয়ে যায়।

ইতিমধ্যে নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি জানান, আগে কলকাতায় থাকতেন। মল্লিকবাজারের কাছে গির্জায় তাঁর মায়ের স্মৃতিতে প্রার্থনা হয়েছে। এ-ও জানান, শারজার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইংরেজি পড়াতেন। পুলিশ এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ অফিসারেরা জানান, তাঁর ভিজিটিং কার্ডে শারজা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল।

Advertisement

অফিসারেরা জানিয়েছেন, জেনিফার বলছিলেন, জেট তাঁকে মুম্বইয়ে ফেরাতে রাজি না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরে থাকবেন। এ-ও জানান, ২৯ অগস্ট তিনি মাসকট থেকে মুম্বইয়ে নামেন। ওই অফিসারদের বক্তব্য, পাসপোর্ট না থাকলে তিনি ভারতে ঢুকতে পারতেন না। তারপরই হয়তো পাসপোর্ট হারান।

গত সোমবার জেনিফার অনুরোধ করেন, তাঁকে মল্লিকবাজারের ওই গির্জায় পৌঁছে দিতে। পুলিশ ভাড়া দিয়ে ট্যাক্সিতে তাঁকে তুলে দেয়। কিন্তু নথি ছাড়া তাঁকে শহরে ঢুকতে দেওয়া হল কেন? পুলিশের তরফে যুক্তি, ডোমেস্টিক ফ্লাইটের যাত্রীকে আটকে রাখা যায় না। আর তিনি বিদেশি নাগরিক, তেমন প্রমাণও ছিল না।

মঙ্গলবার সেই গির্জায় গেলে ফাদার আনন্দ পিকক বলেন, ‘‘মহিলা সোমবার দুপুরে এসে চার্চে থাকতে চান। থাকার ব্যবস্থা না থাকায় পাশের ব্যাপটিস্ট মিশনারি সোসাইটিতে পাঠাই।’’ সোসাইটিতে গেলে জানা যায়, পরিচয়পত্র না থাকায় তাঁকে থাকতে দেওয়া যায়নি। এরপর উল্টোদিকের গেস্ট হাউসের তরফে তাঁকে বলা হয়, পুলিশের কাছে যেতে। এক ট্রাফিক কনস্টেবল তাঁকে পার্ক স্ট্রিট থানায় যেতে বলেন। ওই কনস্টেবল মঙ্গলবার ফোনে বলেন, ‘‘উনি ট্যাক্সিতে উঠে চলে যান।’’

এ দিকে ব্যাপটিস্ট সোসাইটির এক কর্মীর দাবি, সোমবার রাত ৮টা নাগাদ তিনি দেখেছিলেন, মাদার হাউসের কয়েক জন সিস্টার জেনিফারকে ট্যাক্সিতে তুলে দিচ্ছেন। মাদার হাউসে সিস্টার আশাঋতা জানান, রাতে এমন এক মহিলাকে শিশুভবনে থাকার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শিশুভবনের সিস্টার ডমিনিকা জানান, এমন কেউ আসেননি। ট্যাংরায় তাঁদের ‘শান্তিধামে’ যোগাযোগ করলে খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। তবে সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি জেনিফারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন