হাসিরাশি: বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় আলো ঝলমলে বো ব্যারাক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে যেন! খাস কলকাতায় গত রবিবারের ভিড়ের নিরিখে যদি এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত ৬৩ হাজার লোকের উপস্থিতির রেকর্ড তৈরি করে থাকে চিড়িয়াখানা, তা হলে সেই সংখ্যাকে টেক্কা দিয়েছে নিউ টাউনের ইকো পার্ক। সেখানেও ওই দিন ৮০ হাজারের আশপাশে দর্শক সমাগম হয়েছিল বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। আজ, বৃহস্পতিবার বড়দিনে এই সমস্ত রেকর্ড নতুন করে তৈরি হতে পারে বলে দাবি করছে দু’পক্ষই। একই রকম লড়াই চলছে পারদ-পতনেরও। আজ বড়দিনে আরও একটু বেশি ঠান্ডা মালুম হতে পারে বলে জানিয়ে দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের থেকে বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমেছে ০.২ ডিগ্রি। বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বড়দিনের পর থেকে সেই তাপমাত্রা আরও ২-৩ ডিগ্রি কমতে পারে। গত কয়েক বছরের মতো বড়দিনে গরম নয়, ঠান্ডাই অনুভূত হবে শহর ও সংলগ্ন এলাকায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব তেমন নেই। উত্তর-পশ্চিমের ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস বইছে। ঠান্ডা থাকবে বড়দিনে।’’
তবে, এ সব নিয়ে ভাবার ফুরসত উৎসবমুখী জনতার রয়েছে বলে মালুম হয় না। বড়দিনের আগের দিনই শীতের উৎসব যাপনের জন্য পরিচিত জায়গাগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে জনতার ঢল নেমেছিল চিড়িয়াখানায়। একই রকম ভিড় জাদুঘর, সায়েন্স সিটি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, জেল মিউজিয়াম, ইকো পার্ক, নিক্কো পার্কে। সন্ধ্যায় আলো ঝলমলে পার্ক স্ট্রিট ধরে হাঁটতে থাকা এক তরুণী বললেন, ‘‘পরিবার নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ পার্ক স্ট্রিট চত্বরেই একটি খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়ানো আর এক যুবকের মন্তব্য, ‘‘ভিড়ে যদি ঢুকতে না পারি! তাই এ দিনই চলে এসেছি।’’
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন-কাণ্ডের পরে ভিড় নিয়ে বাড়তি সতর্কতা পুলিশেও। লালবাজার জানাচ্ছে, পার্ক স্ট্রিট-সহ আশপাশের অঞ্চলকে সাতটি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটিতে এক জন করে ডিসি পদমর্যাদার অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারেরা। প্রতি ইনস্পেক্টরের সঙ্গে ৩৫ জন করে পুলিশকর্মী থাকবেন। সাদা পোশাকে ঘুরবেন গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশকর্মীরা। প্রতি বারের মতোই গির্জাতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভিড়ের চাপ বুঝে বন্ধ করা হবে পার্ক স্ট্রিট-সহ একাধিক রাস্তায় যান চলাচল।
তবে, চিড়িয়াখানার অধিকর্তা তৃপ্তি শাহ বললেন, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হবে ধরে নিয়ে বন্দোবস্ত করছি আমরা। গত রবিবারই ৬৩ হাজার লোক হয়েছিল। এখন রোজ ভিড় বাড়তে পারে।’’ ভারতীয় জাদুঘরের কর্মী সায়ন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘এখানে ভিড় একটু কমই হয়। মূলত শিক্ষার্থীরাই আসেন। আট থেকে ন’হাজার লোকের ভিড় হতে পারে।’’ কলকাতার ভ্রমণ তালিকায় জায়গা করে নেওয়া জেল মিউজিয়ামের কর্তা জয়ন্ত সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোয়ের সঙ্গে বিশেষ প্রদশর্নী চলায় ভালই ভিড় হচ্ছে।’’ ইকো পার্ক নিয়ে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) এক কর্তা বললেন, ‘‘গত কয়েক বছরে নিউ টাউনে প্রচুর বিনোদন পার্ক হয়েছে। এ বছরের বড়দিনে ভিড়ের রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে।’’
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে