একই ফ্ল্যাট বন্ধক রেখে বারবার ঋণ, গ্রেফতার

তদন্তকারীরা অবশ্য মূল অভিযুক্তকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছেন। ধৃতের নাম অশোক চক্রবর্তী। তার বাড়ি বেহালার পর্ণশ্রীতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৪০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

এ যেন সেই কুমিরছানা দেখানোর গল্প!

Advertisement

একটি ফ্ল্যাট একাধিক বার বন্ধক রেখে ঋণের নাম করে ব্যাঙ্ক থেকে প্রতারকেরা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। প্রতারিত হওয়া সেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তদন্তে দেখা গিয়েছে, মোট পাঁচ জন ওই ফ্ল্যাট বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছে। এবং পরবর্তী সময়ে তারা সেই টাকা ফেরত দেয়নি। পুলিশের অনুমান, কোনও ব্যাঙ্ক-প্রতারণা চক্র এর সঙ্গে জড়িত।

তদন্তকারীরা অবশ্য মূল অভিযুক্তকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছেন। ধৃতের নাম অশোক চক্রবর্তী। তার বাড়ি বেহালার পর্ণশ্রীতে। এই প্রতারণা মামলার সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, ধৃতকে জেরা করে দমদমে একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে, যেটি ঋণ নেওয়ার সময়ে বন্ধক রেখেছিল অভিযুক্ত। বুধবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে দশ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, গত বছরের অগস্ট মাসে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিধাননগর শাখার তরফে মানিকতলা থানায় অভিযোগ করে জানানো হয়, অশোক চক্রবর্তী তাদের ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে। প্রথম দিকে ঋণের কিছু টাকা শোধ করলেও গত বছর থেকে সেই টাকা শোধ করছে না সে। মানিকতলা থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করা হলেও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তের দায়িত্ব নেয়।

তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের প্রাক্তন কর্মী। ২০১৭ সালে প্যান কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো যে সব নথি জমা দিয়ে সে ঋণ নিয়েছিল, সে সমস্তই ছিল ভুয়ো। ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া নথি থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ঋণ নিতে দমদম ক্যান্টনমেন্টের একটি ফ্ল্যাট বন্ধক রেখেছিল ওই অভিযুক্ত। আরও জানা যায়, ওই ফ্ল্যাট দেখিয়ে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছে। এর পরেই ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানাচ্ছে, ঋণের আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া বিভিন্ন নথি ভাল ভাবে খতিয়ে না দেখেই ওই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল। সেই কারণেই একটি ফ্ল্যাট বারবার দেখিয়ে প্রতারকেরা ঋণ নিতে পেরেছিল।

এক গোয়েন্দা-কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের অনুমান, ধৃত ব্যক্তি একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত। তবে ব্যাঙ্কের কোনও কর্মীর সাহায্য ছাড়া এই কারচুপি করা সম্ভব নয়। ব্যাঙ্কের ঋণ বিভাগের কর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ বাকি প্রতারকদের খোঁজ করছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন