Accident

এক আহতের মৃত্যু, উড়ালপুলে পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী নয়

বুধবারের ওই দুর্ঘটনায় পণ্যবাহী সেই গাড়িতে থাকা কড়েয়া এলাকার বাসিন্দা রণজিৎ রায় (৪২) এ দিন সকালে মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৭
Share:

দুর্ঘটনা: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে এই ছোট মালবাহী গাড়িটি উল্টে গিয়েই বাধে বিপত্তি। 

এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে ছোট পণ্যবাহী গাড়ির উল্টে যাওয়ার ঘটনায় শুক্রবার এক জনের মৃত্যু হল। বুধবারের ওই দুর্ঘটনায় পণ্যবাহী সেই গাড়িতে থাকা কড়েয়া এলাকার বাসিন্দা রণজিৎ রায় (৪২) এ দিন সকালে মারা যান। দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি গুরুতর জখম অবস্থায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

Advertisement

এ দিকে, ওই ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে লালবাজার। উড়ালপুল দিয়ে ছোট পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করলেও তা যাতে কোন ভাবে যাত্রী পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত না হয়, সে দিকে নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে। পণ্যবাহী গাড়ি যাত্রী নিয়ে উড়ালপুলে উঠলেই তার বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। ইতিমধ্যে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।

এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুর পরে বাবুঘাটে ঘাটকাজ সেরে বুধবার বিকেলে ছোট পণ্যবাহী গাড়িতে চেপে ফিরছিলেন কড়েয়ার বামনপাড়া লেনের বাসিন্দারা। এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলের বেকবাগানের কাছে উল্টে যায় পণ্যবাহী গাড়িটি। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন ওই গাড়িতে থাকা ২৯ জন। তাঁদেরই এক জন রণজিৎবাবু। দুর্ঘটনায় আহতদের কয়েক জনের অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক বলেই পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে।

Advertisement

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আহত রণজিৎ রায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

লালবাজার জানিয়েছে, শহরের বুকে উড়ালপুলের উপরে দিনের বেলায় ছোট পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করার অনুমতি থাকলেও তাতে যাত্রী তোলার অনুমতি ছিল না। কিন্তু বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মানবিকতার খাতিরে তাতে ছাড় দেওয়া হত। পুলিশের এক কর্তা জানান, এ বার সেই ছাড় যাতে কোনও ভাবেই না মেলে, তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব গার্ডকে। ছোট পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী পরিবহণ ঠেকাতে প্রতিটি উড়ালপুল-সহ সব জায়গায় নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। লালবাজারের দাবি, বুধবারের ওই ঘটনার পরে ভিক্টোরিয়ার দিক থেকে উড়ালপুলে যাত্রী নিয়ে ওঠার চেষ্টা করায় চারটি ছোট পণ্যবাহী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওই দিনের দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হলেও এখনও ধরা যায়নি সেই গাড়িটির চালককে। তবে এ দিন চালকের বিরুদ্ধে গাফিলতির জেরে মৃত্যু ঘটানোর ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তভার কড়েয়া থানার হাত থেকে লালবাজারের ফেটাল স্কোয়াডের (এফএসটিপি) হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জেনেছে, গাড়িটি উড়ালপুলে ওঠার পর থেকেই দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে চলছিল। জখম যাত্রীদের বেশ কয়েক জন পুলিশকে সে কথা জানিয়েওছেন। চালকের অন্যত্র যাওয়ার তাড়া থাকায় তিনি দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দ্রুত গতির কারণে গাড়িটির চাকা ডান দিকের মিডিয়ান ডিভাইডারে ঘষে যায়। তদন্তকারীদের অনুমান, এর পরেই চালক বাঁ দিকে গাড়িটি নেওয়ার চেষ্টা করলে তা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। তার জেরে গাড়িটি ডান দিকে উল্টে যায়। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, চালকের খোঁজ পেলে এবং জখমদের সঙ্গে কথা বলার পরেই সে দিনের দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ওই ঘটনায় গাড়িটির চালকও জখম হয়েছিলেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছিলেন। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে চালকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন