ধৃত পাচারকারী।
সাঙ্কেতিক নাম ‘সূর্যমুখী’। কিন্তু সেই সঙ্কেতের আড়ালে রয়েছে ব্যথা কমানোর কড়া ওষুধ! সেই ওষুধ এতটাই কড়া যে শরীর অবশ তো করেই, তা রক্তে মিশলে চোখে সর্ষে ফুলও দেখতে পারেন অনেকে!
লালবাজারের খবর, এই ‘সূর্যমুখী’ আসলে মরফিন নামের এক ওষুধ। যা ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে ব্যথা উপশমে ব্যবহার করেন চিকিৎসকেরা। এই ওষুধই মাদক হিসেবে পাচার করা হচ্ছিল শহরে। শুক্রবার রাতে শিয়ালদহের কাছে একটি হোটেলে হানা দিয়ে এক মাদক কারবারিকে পাকড়াও করার পরে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, এই মরফিন মূলত কলকাতার তরুণ প্রজন্মের কাছে নেশার দ্রব্য হিসেবে বিক্রি করা হত।
লালবাজার সূত্র জানিয়েছে, ধৃতের নাম জেমস কাথ। বাড়ি নাগাল্যান্ডের কোহিমায়। তাঁর কাছ থেকে পাঁচ প্যাকেট মরফিন উদ্ধার করা হয়েছে, যার মূল্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। ধৃতকে শনিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তদন্তকারীদের দাবি, রাজ্যে এর আগে কোথাও মরফিন পাচারের ঘটনা দেখা যায়নি। জেমস উত্তর-পূর্ব ভারতের মাদক চক্রের অন্যতম চাঁই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লালবাজার সূত্রের খবর, মাস দুয়েক আগে সদর স্ট্রিট থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট নামে এক ধরনের মাদক-সহ তাপস আহমেদ নামে এক বাংলাদেশি মাদক পাচারকারী এবং এক হোটেলের মালিককে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে লুসি ক্যারেনা নামে মিজোরামের এক মহিলার নাম জানা যায়। গত সপ্তাহে লুসিকেও ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ পাকড়াও করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। লুসির কাছ থেকেই ‘সূর্যমুখী’র কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরে খোঁজ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানেন, জেমস নামে ওই ‘সূর্যমুখী’র কারবারি শুক্রবার কামরূপ এক্সপ্রেসে চেপে হাওড়ায় আসছেন। সেই মতো গোয়েন্দারা তাঁর পিছু নেন। জেমস ট্যাক্সি চেপে শিয়ালদহে পৌঁছে একটি হোটেলে উঠলে বিকেলে সেখানে হানা দেন গোয়েন্দারা।
উদ্ধার হওয়া মাদক।
জেমসকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, এই শহরে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ও বিধিনিষেধ মেনে মরফিন বিক্রি হয়। তাই মাদক চক্রের কারবারিরা মায়ানমার থেকে ওই মাদক মণিপুর-নাগাল্যান্ড হয়ে কলকাতায় আনে। এখানে বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়া এবং নাইট ক্লাবের নিত্যদিনের পার্টিতে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের মধ্যেই এর চাহিদা বেশি। কয়েকটি নাইট ক্লাবের নামও পুলিশ জানতে পেরেছে। পার্ক সার্কাস ও শিয়ালদহ এলাকায় এই মাদক পাচার চক্রের কয়েক জন এজেন্টের নামও পুলিশ জানতে পেরেছে বলে সূত্রের দাবি।
—নিজস্ব চিত্র।