নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাবুঘাট থেকে বোকারোগামী বাস উল্টে গিয়ে মৃত্যু হল এক অজ্ঞাতপরিচয় বাসযাত্রীর। রবিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে প্রিন্সেপ ঘাট সংলগ্ন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সামনে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন বাসযাত্রী।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বাবুঘাট থেকে ছাড়ার পরেই বাসটির গতি খুব বেশি ছিল। প্রিন্সেপ ঘাটের দিকে বাঁক নিয়ে স্ট্র্যান্ড রোডের একটি ডিভাইডারে ধাক্কা মারে সেটি। তার পরেই এক দিকে কাত হয়ে পড়ে বাস। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বাসের গতি খুবই বেশি থাকায় ডিভাইডার দেখেও বাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি চালক। বাসের ছাদে ও ভিতরে প্রচুর জিনিসপত্র বোঝাই করা ছিল। ফলে ধাক্কা খেয়ে সেটি বেসামাল হয়ে যায়।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। চলে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। তাঁরাই কাত হয়ে থাকা বাসের জানালার কাচ ভেঙে যাত্রীদের বের করে আনেন। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এর পর ক্রেনের সাহায্যে বাসটিকে সোজা করা হয়। বাসের নীচে চাপা পড়া বছর পঞ্চাশের আরও এক যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে ওই ব্যাক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই বাসেরই এক নিত্যযাত্রী বিনোদ সিংহ জানান, প্রায়ই তাঁকে কাজের জন্য কলকাতা আসতে হয়। পরে রাতের এই বাস ধরেই তিনি বোকারো ফিরে যান। তাঁর অভিযোগ, গত এক মাসের উপর এই রাস্তার একাংশ অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। কিন্তু কারও সে দিকে কোনও নজর নেই। ঘটনার পর আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসা লোকজনও জানান, তাঁরা একাধিক বার সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে জানালেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পরে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, দুর্ঘটনাগ্রস্থ ওই বাসের বেশ কয়েক জন যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য আনা হলেও, বাসের চালক মনোজ সিংহকেই ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মনোজের জখম গুরুতর। পায়ে চোট রয়েছে। বাকি যাত্রীরা অল্প-বিস্তর আহত হয়েছেন। রাতেই তাঁদের চিকিৎসা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার জেরে বাসের তেল রাস্তার উপরে পড়ায়, রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাস্তাটি বন্ধ রাখা হয়। তেল ঢাকতে ছড়ানো হয় বস্তা বস্তা বালি। রাত ১২ টা নাগাদ যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে খবর।