সমাগম: দক্ষিণেশ্বরে দর্শনার্থীদের লাইন পৌঁছে গিয়েছে বালি ব্রিজে। মঙ্গলবার সকালে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
ভোর থেকেই উপচে পড়া ভিড়। দক্ষিণেশ্বরে কল্পতরু উৎসবের সেই ভিড় সামাল দিতে দর্শনার্থীদের জন্য একমুখী করতে হল স্কাইওয়াককে। এক দিকে দর্শনার্থী, আর এক দিকে যানবাহনের ভিড় সামলাতে গিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা হল পুলিশ-প্রশাসনেরও। পাশাপাশি, কল্পতরু উৎসবে দর্শনার্থীদের ঢল নামল কাশীপুর উদ্যানবাটীতেও।
এক দিকে নতুন বছরের প্রথম দিনের ছুটি, অন্য দিকে কল্পতরু উৎসব। এই দুই কারণে দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিণী মন্দিরে পুজো দেওয়ার ভিড় হয় প্রতি বছরই। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই সোমবার রাত তিনটে থেকে পুজো দেওয়ার জন্য ভিড় জমতে শুরু করে। মঙ্গলবার সকাল হতেই পাল্লা দিয়ে দর্শনার্থীদের ঢলও বাড়তে শুরু করে। পুজো দেওয়ার লাইন মন্দির চত্বর ছাড়িয়ে এলাকার বিভিন্ন দিকে চলে যায়। বেলা বাড়তেই বালি ব্রিজ পার করে দর্শনার্থীদের লাইন চলে যায় বালিখালের কাছাকাছি। এ দিন দক্ষিণেশ্বর মোড় থেকে স্কাইওয়াকের নীচে, মন্দিরে যাওয়ার রাস্তায় যানবাহনের ঢোকা-বেরনো বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
পাশাপাশি, ভিড় সামলাতে এ দিন ভোর থেকেই স্কাইওয়াকের উপর দিয়ে মন্দিরে যাওয়া বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। বদলে স্কাইওয়াকের নীচে রানী রাসমণি রোড দিয়ে মন্দিরে ঢোকানো হয় দর্শনার্থীদের। তবে মন্দির থেকে বেরনোর সময়ে দর্শনার্থীদের স্কাইওয়াকের উপর দিয়েই
ফিরতে হয়েছে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিগত কয়েক বছরের ভিড়ের রেকর্ড এ বারে ছাপিয়ে গিয়েছে। স্কাইওয়াক হওয়ার পর থেকেই যে কোনও অনুষ্ঠানে ভিড় বেশি হচ্ছে। তাই স্কাইওয়াক একমুখী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, এ দিন ভোর ৪টে থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুজো
নেওয়া হয়েছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, এ দিন বেলা ১২টার মধ্যেই প্রায় পাঁচ লক্ষ দর্শনার্থীর ভিড় জমেছিল দক্ষিণেশ্বরে। পরে তা আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সাদা পোশাকের পুলিশ থেকে শুরু করে বেলঘরিয়া থানা ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে স্কাইওয়াক থেকে নেমে সামনের রাস্তায় দর্শনার্থীদের ইচ্ছেমতো হাঁটাচলার জেরেও এ দিন যানজট হয় বালি ব্রিজে। কোনও কোনও সময়ে যান়জটের জের পৌঁছে যায় বালি হল্টের কাছাকাছি।
কাশীপুর উদ্যানবাটীতে এ দিন ভোর সাড়ে ৪টেয় মঙ্গলারতি, ঊষাকীর্তন দিয়ে সূচনা হয় কল্পতরু উৎসবের। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বিশেষ পুজো, হোম ও ভক্তিগীতি-সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানও হয়।