এই কাঠামো ভাঙতে গিয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিন জন। নিজস্ব চিত্র
হোর্ডিংয়ের কাঠামো ভাঙতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঝুলছিলেন এক শ্রমিক। কাঠামোর অন্য দিকে এক জন তখনও কাঁপছেন। কোনও রকমে লাফিয়ে বাঁচেন তিনি। আরও এক জন তত ক্ষণে কাঠামো থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করে স্থানীয় বাসিন্দারাই বাঁশ দিয়ে ঝুলন্ত ব্যক্তিকে নামান। শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো চত্বরে। স্থানীয়েরা তিন জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতের নাম জাকির মোল্লা (৪০)। তিন জনেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার তদন্ত করছে যাদবপুর থানার পুলিশ।
আহত দুই শ্রমিকের মধ্যে লক্ষ্মী নাইয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্য শ্রমিক বিকাশ বেরাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং সিইএসসি-র কর্মীরা যান। যে হোর্ডিং সংস্থার কাঠামো ভাঙা হচ্ছিল, তাদের গাফিলতির অভিযোগ জানিয়ে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ পুলিশের মামলা রুজু করেছে। সিইএসসি-র বক্তব্য, যে পুরনো হোর্ডিংয়ের কাঠামো ভাঙা হচ্ছিল তার উপর দিয়ে চালু ‘গ্লোসাইন’ বোর্ডের বৈদ্যুতিক তার গিয়েছে। অথচ কাঠামো ভাঙতে সাবধানতা নেওয়া হয়নি।
টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর কর্মীরা জানান, ট্রাম কোম্পানির অনুমতি নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা ডিপোর চত্বরে কাঠামো লাগিয়েছিল। কিন্তু চত্বর সম্প্রসারণের জন্য ফেব্রুয়ারিতেই কাঠামো ভাঙতে সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছিল ট্রাম কোম্পানি। প্রত্যক্ষদর্শী তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই তিন জন কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কাঠামো ভাঙছিলেন। হঠাৎ দেখি, এক জন ঝুলছেন। আমরাই তাঁকে বাঁশ দিয়ে নামাই।’’ লক্ষ্মীর দাদা সুরঞ্জন নাইয়া বলেন, ‘‘ভাই হোর্ডিং ভাঙতে কয়েক দিন ধরে টালিগঞ্জের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করছিল। দুপুরে খবর পেলাম, কাজ করতে গিয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’’ এ দিন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং বিজ্ঞাপন সংস্থার আধিকারিককে ফোন বা মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি।