ওয়ার্ড-৭৫

প্রতিশ্রুতিই সার, পরিষেবা তিমিরেই

ভোট আসে, ভোট যায়। শোনা যায় প্রতিশ্রুতির ঢেউ। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয় না। এ ভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াটগঞ্জের মুন্সিরগঞ্জ এলাকার একাধিক বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই ওয়ার্ডে নানা পুর-পরিষেবা ঠিকমতো পাওয়া যায় না। দীর্ঘ দিন নিকাশির সংস্কার হয়নি। জমে আছে আবর্জনার স্তূপ। নোংরা আবর্জনার দমবন্ধ করা পরিবেশের মধ্যে থাকতে থাকতে ভোটের মুখে ক্ষোভের পারদ ক্রমেই বাড়ছে। এই অবস্থার জন্য পুরসভার উদাসীনতাকেই দায়ি করেছেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৪
Share:

বদলায় না ছবিটা। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

ভোট আসে, ভোট যায়। শোনা যায় প্রতিশ্রুতির ঢেউ। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয় না। এ ভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াটগঞ্জের মুন্সিরগঞ্জ এলাকার একাধিক বাসিন্দারা।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই ওয়ার্ডে নানা পুর-পরিষেবা ঠিকমতো পাওয়া যায় না। দীর্ঘ দিন নিকাশির সংস্কার হয়নি। জমে আছে আবর্জনার স্তূপ। নোংরা আবর্জনার দমবন্ধ করা পরিবেশের মধ্যে থাকতে থাকতে ভোটের মুখে ক্ষোভের পারদ ক্রমেই বাড়ছে। এই অবস্থার জন্য পুরসভার উদাসীনতাকেই দায়ি করেছেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

এই ওয়ার্ডের অধিকাংশ জায়গায়ই যত্রতত্র নোংরা ডাঁই করা থাকে। রাস্তার কোণায় কোণায় উন্মুক্ত প্রস্রাবাগার। কিন্তু সেগুলিকে পরিষ্কার করার কোনও ব্যবস্থাই নেই বলে অভিযোগ। রয়েছে উন্মুক্ত ভ্যাটও। এ ছাড়াও রাস্তা জুড়ে আবর্জনা ছড়িয়ে থাকে। বর্ষার সময়ে আবর্জনার সঙ্গে জল মিশে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। নর্দমা বন্ধ থাকায় রাস্তায় জল উপচে পড়ে। তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই দিনের পর দিন থাকতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের।

Advertisement

উন্মুক্ত প্রস্রাবাগার নিয়েও সমস্যা রয়েছে। কয়েকটির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। কয়েকটি প্রস্রাবাগারে আবর্জনা জমে রয়েছে। অবস্থা এমনই যে প্রস্রাবাগারের পাশের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যায় না। তা ছাড়া কয়েকটি প্রস্রাবাগার বাড়ির পাশে হওয়ায় বাসিন্দাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা কী ভাবে বেঁচে আছি তা নিয়ে কারোও মাথাব্যথা নেই। নোংরা আর দুর্গন্ধের মধ্যে দিনের পর দিন লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়।’’ আর এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘এই অবস্থায় শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ’’

যদিও এর পিছনে এলাকারই কিছু বাসিন্দাদের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ‘‘পুরভার উদাসীনতা তো রয়েইছে। তার উপরে বাসিন্দাদের একাংশও এলাকা নোংরা করেন।’’ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসে এই ওয়ার্ডের নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন বাবলু করিম। তাঁর অভিযোগ, পুরসভার সদিচ্ছার অভাবে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই অবস্থা। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকা দেখলেই বোঝা যায় সাধারণ মানুষের কাছে পুর-পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কোনও পরিকল্পনাই করা হয়নি। দিনের পর দিন অবহেলায় থাকতে থাকতে এলাকার চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। সবার আগে সাধারণ মানুষকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে হবে। তার জন্য নিকাশি ও এলাকার সংস্কারের প্রয়োজন।’’

সিপিএমের বিদায়ী কাউন্সিলর বিলকিস বেগম অবশ্য এই অবস্থার জন্য রাজনৈতিক দলাদলিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াটগঞ্জের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাটি এই এলাকার নর্দমাগুলিতে ফেলা হয়। পুরসভাকে বহুবার জানানো সত্ত্বেও পুর-কর্তৃপক্ষ কান দেননি।’’ অন্য দলের হওয়ার কারণেই তাঁর আবেদনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেই দাবি। এলাকাটি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। তাই বিলকিস বেগম পুরমন্ত্রীকেও দায়ী করেছেন।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কাউন্সিলরের পুরসভাকে জানান উচিত। আমাকেও জানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। কাউন্সিলর যদি পুরসভাকে বিষয়টি জানিয়ে থাকেন তবে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন