দক্ষিণেশ্বরে স্কাই-ওয়াক নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছিল আগেই। দোকানদারদের সেই প্রতিবাদ মঞ্চেই এ বার সামিল সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস। সকলেরই দাবি, তাঁরা উন্নয়নের বিরোধী নন। কিন্তু প্রকল্পকে সমর্থনও করছেন না। যদিও রাজ্যের তরফে দোকানদারদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, স্কাই-ওয়াক তৈরি হবেই।
সরকারের সিদ্ধান্তকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে রবিবার দু’টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে প্রতিবাদী মঞ্চ গড়লেন রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতির সদস্যরা। সমিতির সম্পাদক অজিত সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। সব দলের মানুষকে নিয়েই আন্দোলন।’’ কিন্তু শাসকদলের প্রকল্প বলেই তৃণমূলের কাউকে ডাকা হয়নি।
কাজ শুরু না হওয়ায় সম্প্রতি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে দোকানদারদের পুনর্বাসনের জায়গা স্থির হলেও পরে তার বিরোধিতা করেন দোকানদারেরাই। কামারহাটির পুর-চেয়ারম্যান, তৃণমূলের গোপাল সাহা বলেন, ‘‘দোকানদারদের বলা হয়েছিল, একই জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁরা জটিলতা তৈরি করছেন জানি না।’’
অজিতবাবু এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘আলোচনায় ডাকলেও আমাদের প্রস্তাব শোনা হয়নি।’’ এ দিনের সভায় ছিলেন বিজেপি-র রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, কামারহাটির প্রাক্তন বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোবিন্দ গঙ্গোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তাপস মজুমদার। রূপাদেবী বলেন, ‘‘রাজ্যের অনেক কিছুই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, দক্ষিণেশ্বরটা ছেড়ে দিন। দক্ষিণেশ্বর হেরিটেজ স্থান। সেখানে এমন কিছু হতে পারে না। যানজট কমাতে বরং ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করুন।’’ ঋতব্রতবাবু বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিষয়টি আমি লোকসভার স্থায়ী সমিতিতে আলোচনাতেও তুলব।’’
দোকানদারদের দাবি, তাঁদের সরিয়ে প্রকল্প করা যাবে না। প্রয়োজনে রেলের থেকে জমি নিয়ে রাস্তা চওড়া করা হোক বা নিবেদিতা সেতুর নীচে পার্কিং লট হোক। সমিতির অভিযোগ, সরকারকে সামনে রেখে মন্দিরের ভিতরে পার্কিংয়ে কর্তৃপক্ষ আয়ের চেষ্টা করছেন। যদিও মন্দিরের তরফে কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। বহু বছর ধরে মন্দিরের ভিতরে পার্কিং ব্যবস্থা আছে। যানজট কমাতে সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম। ওঁরা কাউকে উচ্ছেদ না করেই এই প্রকল্প নিয়েছেন। তাতেও কেন এত জটিলতা জানি না।’’